করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে তৃতীয় দিনের মতো চলছে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’। তবে অন্য দুই দিনের চেয়ে শুক্রবার রাস্তায় মানুষের চলাচল বেড়েছে, কোনও না কোনও প্রয়োজন দেখিয়ে বাইরে বের হয়েছে মানুষ। মূল সড়ক তো বটেই; মোড়ে মোড়ে ভিড় করেছে জনতা।
সকাল থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত নগরীর কয়েকটি সড়ক, গলি ও কাঁচাবাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে আগের মতোই কঠোর অবস্থানে আছে পুলিশ। গাবতলী, শ্যামলী, নিউমার্কেট, শাহবাগ, প্রেসক্লাব মোড়, দৈনিক বাংলাসহ বেশ কিছু এলাকায় সিএনজি, ব্যক্তিগত গাড়ি ও রিকশার মতো বাহনে ঘুরতে দেখা গেছে মানুষকে।
কেউ কেউ বের হয়েছে বাজারের ব্যাগ হাতে নিয়ে। আবার কেউ বা বের হয়েছে খালি হাতেই, এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় যাচ্ছেন তারা। তবে এর যৌক্তিক কারণ তারা জানাতে পারেননি। মূল সড়কে পুলিশের তৎপরতায় বেশি থাকায় কেউ কেউ যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করছে গলি। সকালের দিকে মানুষকে আড্ডাও দিতে দেখা গেছে কিছু এলাকায়।
কারওয়ানজারে কাঁচাবাজারে সবজি কিনতে আসা তাশফিয়া সমকালকে বলেন, ফার্মগেট থেকে সবজি কিনতে এসেছেন তিনি। রিকশায় গলি দিয়ে এসেছেন, হাতে ব্যাগ থাকায় কোনও প্রতিবন্ধকে আটকে থাকতে হয়নি।
মগবাজার মোড়ে পুুলিশের জেরার মুখে পড়তে হয়েছে শাহবাগগামী টিটু আহমেদকে। তিনি বলেন, কয়েক জায়গায় থামিয়েছে পুলিশ। মুভমেন্ট পাস দেখে যেতে দিয়েছে।
মহাখালী ব্যাসস্ট্যান্ডের বিপরীত পাশ ও নাখালপাড়ার দিকে মোড়ে মোড়ে যৌক্তিক প্রয়োজন ছাড়াই অনেককে গলির মোড়ে জমায়েত হতে দেখা গেছে। কেউ কেউ বলেছেন ইফতার সামগ্রী কিনতে এসেছেন, কেউ বলেছেন কাঁচা বাজার নিতে এসেছেন। তবে এর মধ্যেও এসব এলাকায় মোড়ে ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকা অনেকেই বাইরে বের হওয়ার যৌক্তিক কারণ বলতে পারেননি। আবার কেউ কেউ কিছু একটা প্রয়োজন দেখিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। এসব চেকপোস্টে গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের পরিচয় এবং রাস্তার বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করা হচ্ছে। ‘মুভমেন্ট পাস’ দেখিয়ে চলছেন অনেকে। যেসব পেশার মানুষ জরুরিসেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের চেকপোস্ট অতিক্রম করার অনুমতি দিয়ে অন্যদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া অনেক রাস্তাতে বেরিকেড বসিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের তৎপরতার পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন গলিতে নির্দিষ্ট স্থান পরপর বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধক গড়ে তুলেছেন স্থানীয়রা। রিকশাসহ ছোট যানবাহনগুলো আটকে দেওয়া হচ্ছে সেখানে। তবে পায়ে হেঁটে চলাচল করা যাচ্ছে।
দেশে করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে বুধবার থেকে কঠোর বিধিনিষধের ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু এই বিধিনিষেধকে বলা হচ্ছে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’। বুধবার ভোর ৬টা থেকে আগামী ২১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত সাতদিন এ বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে। তবে গার্মেন্টসসহ শিল্প কারখানা এবং ব্যাংক খোলা রয়েছে।