মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া– সুনামগঞ্জের ছাতকে মসজিদ পরিচালনা কমিটি নিয়ে যবলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে আভ্যন্তরীন দ্বন্দের ঘটনায় সংঘর্ষে ছুরিকাঘাতে উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি
লায়েক মিয়ার মৃত্যুতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। গতকাল শুক্রবার (৩১ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টায় মৃত যুবলীগ নেতার ভাই আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা নং ২৫ দায়ের করেছেন।
এই মামলায় স্থানীয় সংসদ সদস্যের ভাতিজা তানভীর রহমান, উপজেলা যুবলীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস শিবলু, সাদমান মাহমুদ সানি, পৌরসভার প্যানেল মেয়র তাপস চৌধুরী, সাবেক জামায়াত
নেতা আলাউদ্দিন, আবুল খায়ের টুটুল, তাজ উদ্দিন, মিজান মিয়া, আব্দুল মতিন, শামসুল ইসলাম, মিলন মিয়া, এরশাদ আলী, সায়মন, মহসিন ও সৌরভসহ মোট ১৮জনকে আসামী করা হয়েছে।
এরআগে এদিন বিকেলে ছাতক উপজেলা আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা যুবলীগ সহ-সভাপতি লায়েক মিয়ার হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবীতে ছাতক পৌরশহরে বিক্ষোভ
মিছিল করে। পরে উপজেলা আওয়ামীলীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে ছাতক পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামীলীগ নেতা আবুল কালাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সমাবেশ বক্তব্য রাখেন- সুনামগঞ্জ
জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আজমল হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শামীম আহমেদ চৌধুরী, ছাতক উপজেলা সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম,
নোয়ারাই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান দেওয়ান পীর আব্দুল খালিক রাজা, ছাতক পৌরসভার কাউন্সিলর ইরাজ মিয়া, সালেক মিয়া, শফিকুল ইসলাম, নাজিমুল হক, আব্দুল কাদির, রিয়াদ আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- ছাতক উপজেলার লাল মসজিদ পরিচালনা কমিটি নিয়ে যুবলীগ নেতা লায়েক মিয়া ও এরশাদ আলীর মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলছিল। তারই জের ধরে গত
সোমবার (২৭ মার্চ) বিকেলে যুবলীগ নেতা লায়েক মিয়ার পক্ষের কাজল মিয়া ও এরশাদ আলীর পক্ষের শিবলু আহমেদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। তারই জের ধরে গত
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাত ৯টায় থানা সংলগ্ন গণেশপুর খেয়াঘাটে একটি চায়ের দোকানে যুবলীগ নেতা লায়েক মিয়া ও এরশাদ মিয়ার লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। ওই সময় ধারালো ছুরিকাঘাতে
লায়েক মিয়া গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাতেই সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে পথেই যুবলীগ নেতা লায়েক মিয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। আর এই খবর তাৎক্ষনিক ভাবে জানা জানি হওয়ার পর যুবলীগ নেতার লোকজন এরশাদ আলী ও নাজিম উদ্দিনের বসতবাড়ি ভাংচুর করে অগ্নি সংযোগ করে।
এখবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যুবলীগ নেতা এরশাদ আলী ও তাজ উদ্দিনকে গ্রেফতার করে। এঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ মোতায়ন করা হয়।
এব্যাপারে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবু সাইদ ও ছাতক থানার ওসি মোহাম্মদ মাইনুল জাকির সাংবাদিকদের জানান- মৃত যুবলীগ নেতার ভাই আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় মামলা নং ২৫ দায়েরের পর সংঘর্ষের ঘটনার সাথে জড়িতদেরকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।