মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া- সুনামগঞ্জে গত ৩দিনে পৃথক ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ৮জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। পৃথক স্থান থেকে মৃতদের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানোসহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- গতকাল শুক্রবার (২৩ জুন) সন্ধ্যায় জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের বাদল মিয়ার স্ত্রী ৫ সন্তানের জননী আছিয়া বেগম (৪৫) বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু
হয়। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় রান্নাঘরের পুড়ে যাওয়া বিদ্যুতের তারে সাথে জড়িয়ে পড়লে এই দূর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার (২২ জুন) ভোরে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ গাজীনগর গ্রামের উমেদ মিয়ার ছেলে সাজ্জাদুল ইসলাম (৪৫) পাহাড়ি ঢলের পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে ¯্রােতের কবলে পড়ে খালে পড়ে নিখোঁজ হয়ে যায়।
অনেক খোঁজাখুজির পর বিকেলে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা খালের পানি থেকে লাশ উদ্ধার করে। পরে রাত ৮টায় ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ মর্গে পাঠায় পুলিশ। এদিন দুপুর ২টায় তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের দুধের
আউটা গ্রামের জয় হোসেনের শিশুকন্যা ফারিয়া আক্তার (দেড় বছর) পরিবারের অগোচড়ে বসতবাড়ি সংলগ্ন পাটলাই নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। বিকেলে পানিতে ওই শিশুর লাশ ভেসে উঠলে স্থানীয়রা থানায় জানালে পুলিশ এসে
উদ্ধার করে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে। অন্যদিকে বিকেলে শাল্লা উপজেলার ধাড়ইন নদী থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী জবা রানী দাস (৭) এর লাশ উদ্ধার করা হয়। এরআগে গত মঙ্গলবার (২০ জুন) সকাল ১১টায় গৃহবধু দুর্লভ রানী
দাসের লাশ (৩০) উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। শাল্লা উপজেলা সদর থেকে নিজ বাড়িতে যাওয়ার সময় সড়কের ওপর দিয়ে প্রবাহিত পাহাড়ি ঢলের ¯্রােতের কবলে পড়ে ধাড়ইন নদীতে গিয়ে ডুবে নিখোঁজ হয়ে যায় গৃহবধু
দুর্লভ রানী দাস ও তার দুই সন্তান দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী জবা রানী দাস, প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী বিজয়া রানী দাস (৬)। তারা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের বিলপুর গ্রামের বাসিন্দা। এদিকে গত বুধবার (২১ জুন) সন্ধ্যায় জেলার শাল্লা
উপজেলার সুলতানপুর গ্রাম সংলগ্ন হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতের শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয় জেলে লিটন মিয়া (৪০)। পরে স্থানীয়রা তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে রাত ৮টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর
কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষনা করেন। এদিন সন্ধ্যায় দোয়ারাবাজার উপজেলা সদরের লোকনাথ জুয়েলারী ওয়ার্কশপের পিছনের অবস্থিত সুরমা নদীর তীরে বোবা যুবক মাঈনুদ্দিনের (১৮) লাশ পানিতে ভাসতে দেখে থানায় খবর
দেয় স্থানীয়রা। পরে রাত ৮টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু কি ভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যু আসল কারণ জানা যাবে বলে
জানিয়েছে পুলিশ। মৃত যুবক উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের পশ্চিম টেংড়া গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে।
শান্তিগঞ্জ থানার ওসি খালেদ চৌধুরী, দোয়ারাবাজার থানার ওসি দেব দুলাল ধর, তাহিরপুর থানার এসআই জাহাঙ্গীর হোসাইন ও শাল্লা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম পৃথক ঘটনায় ৮জনের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।