মোহাম্মদ দুদু মল্লিক, শেরপুরের শ্রীবরদীতে চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী ৯বছর আত্মগোপনে থাকা জামানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্প।
১৪ আগষ্ট সোমবার রাতে জামান ওরফে জবেদ আলীকে গাজীপুর জেলার শালনা থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত জামান শ্রীবরদী উপজেলার গোপালখিলা গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে।র্যাব জানায়, ভিকটিম
একজন স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী।বিবাদী জামান ওরফে জবেদ আলী ভিকটিমকে স্কুলে যাতায়াতের পথে অনেকদিন থেকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। ভিকটিম প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ১৪/০৭/২০১৪ তারিখে সকাল অনুমান
৮টার সময় ভিকটিম প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে কাজিমদ্দিন মন্ডলের বাড়ীর সামনে ঝিনাইগাতী- ধানশাইল পাঁকা রাস্তায় পৌঁছা মাত্রই উৎপেতে থাকা আসামী জামান ওরফে জবেদ আলী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভিকটিমের ইচ্ছার
বিরুদ্ধে জোর পূর্বক সিএনজিতে উঠিয়ে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।পরবর্তীতে প্রাইভেটের সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও ভিকটিম বাড়ীতে না আসায় তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করে।
খোঁজাখুজির একপর্যায়ে ভিকটিমের বাবা লোক মারফত জানতে পারেন যে, ভিকটিমকে আসামী জামান ওরফে জবেদ আলী ঢাকায় নিয়ে গেছে। পরবর্তীতে ভিকটিমের বাবা এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে নিয়ে বিবাদীর বাড়ীতে গিয়ে
ভিকটিমের অপহরণের বিষয়টি জানতে চাইলে পরিবারের লোকজন জানায় যে, ভিকটিম আসামী মোঃ জামান ওফরে জবেদ আলীর নিকট আছে এবং উক্ত বিষয় নিয়ে মামলা মোকাদ্দমা করিলে ভিকটিমের প্রাণ নাশের হুমকি দেয়।
পরবর্তীতে ঝিনাইগাতী থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঢাকা থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। অতঃপর ভিকটিম জানায় যে, আসামী জামান ওরফে জবেদ আলী ঢাকায় একটি ভাড়া বাসায় এক মাস আটকে রেখে তাকে
ভয়ভীতি দেখিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের বাবা ঝিনাাইগাতী থানায় অভিযোগ দাখিল করে। মামলা নং-০৬, তারিখ- ১৫/০৮/২০১৪ ইং, ধারা-৭/৯(১)/৩০ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন/২০০০
(সংশোধনী/০৩) অপহরণ পূর্বক ধর্ষণ মামলা রুজু করেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত শেষে আসামীর বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৯(১)/৩০ ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
জেলা ও দায়রা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, শেরপুর এর বিচারক মোহাম্মদ মোসলেহ্ উদ্দিন গত ০৬/০৭/২০২০ ইং আসামী জামান ওরফে জবেদ আলী (৩১) এর বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন
আইনের ৭/৯(১) ধারায় অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় প্রত্যেক ধারায় আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করেন। ঘটনার পর থেকেই আসামী ৯ বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিল। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তিনি ঢাকা জেলার বিভিন্ন এলাকায় গার্মেন্টস শ্রমিক এবং সিএনজি চালক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন।
অতঃপর বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে আসামির অবস্থান সনাক্ত করে কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান এর নেতৃত্বে র্যাবের একটি অভিযানিক দল সোমবার রাতে গাজীপুর জেলার শালনা থানাধীন কাথোরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। পরে সোমবার রাতেই জামান ওরফে জবেদ আলীকে উক্ত মামলায় শ্রীবর্দী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।