কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তার চরাঞ্চলে আগাম জাতের আলু তুলতে শুরু করেছেন চাষিরা। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার কম উৎপাদন খরচে আলুর বাম্পার ফলন ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায়
কৃষকরা আগাম জাতের আলু চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন। ফলনে ও দামে খুশি কৃষকেরা। জমি থেকে পাইকাররা ৪৩ টাকা কেজি দরে আলু কিনে নিয়ে যাচ্ছে। বাজারে খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা
পর্যন্ত। উজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এবারে আলু চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৩০ হেক্টর। এ পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ১ হাজার ৯০ হেক্টর। যা লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ৫০ হেক্টর বেশি
অর্জিত হয়েছে। এছাড়া আলু চাষিদের বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই ও পোকামাকড় নিধন সম্পর্কে পরামর্শ দেয়া অব্যহত রয়েছে। সরেজমিন উপজেলার তিস্তার চরে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আগাম জাতের আলু তুলতে
ব্যস্ত সময় পার করছেন আলু চাষিরা। তারা জমিতে নারী ও পুরুষ শ্রমিকদের দিয়ে সারাদিন আলু উঠিয়ে নিচ্ছেন। আবার কোথাও জমিতেই আলু উঠিয়ে পাইকেরিতে বিক্রি করছেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে
পাইকেরিতে আলু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকেরারা। আলুর বাম্পার ফলনে ও দামে খুশি কৃষকেরা। তারা বলেন, এবারে আলু চাষে দ্বিগুণ লাভ হবে।তিস্তার চরের আলু চাষি রোস্তম আলী (৬৫) বলেন এবারে আলু চাষ
করেছেন প্রায় ২ একর জমিতে। এপর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। আলুর আশা করছেন প্রায় ৩’শ মণের। বর্তমান বাজারে পাইকেরিতে আলু মণ প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৭’শ টাকা। ৩’শ মণ আলুর মূল্য হয় প্রায়
৫ লক্ষ টাকা। খরচ হওয়ার পরেও লাভের আশা করছেন প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার। এছাড়াও তিস্তার চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার আলু চাষিদের মধ্যে ছক্কু মিয়া, ফুল মিয়া ও আব্দুল মতিন সহ আরও অনেকে বলেন, এবারে আগাম জাতের আলুর ফলন ও দামে অনেক খুশি। তারা আরও জানান, এবারে বন্যা হওয়ায় জমিতে পলি পড়ে
স্তর সৃষ্টি হয়েছে। ফলে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এবারে অনেক লাভবান হবেন বলে জানান তারা। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, কৃষকরা ফসলের মাঠ থেকে আগাম জাতের আলু উত্তলন শুরু
করেছেন। আলু চাষিদের কৃষি অফিস থেকে সবধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আগাম জাতের আলুর ফলন তুলনামুলক কম হয় তারপরেও এবার ফলন মোটমুটি ভালো হয়েছে। কৃষকরা বর্তমান বাজারে
আলু দাম বেশ ভালো পাচ্ছেন। এর পরের মৌসুমে আগাম জাতের আলু লাগানোর জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন, বিশেষ করে তিস্তার চরাঞ্চলে আগাম জাতের
আলু চাষিরা ৫৫ থেকে ৬০ দিনে আলুর ফসল উত্তোলনের পর আবার তারা ভুট্টা লাগাবেন। এবারে তিস্তার চরাঞ্চলে বন্যা হওয়ায় জমিগুলোতে পলির স্তর পড়েছে। সে কারণেই আলুর ফলন অনেক ভালো হয়েছে।
এবারে উপজেলায় আলু চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ হাজার ৩০ হেক্টর। লক্ষ্য মাত্রার থেকে ৫০ হেক্টর বেশি অর্জিত হয়েছে। বাজারে আলুর দাম ভালো থাকায় আগাম জাতের আলু চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।