বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪
spot_img
Homeপ্রধান সংবাদঅসময়ে যমুনার ভাঙন, বিলীন ২ শতাধিক ঘরবাড়ি

অসময়ে যমুনার ভাঙন, বিলীন ২ শতাধিক ঘরবাড়ি

ডেস্ক রিপোর্ট

সিরাজগঞ্জের উপকূলীয় অঞ্চল শাহজাদপুরে তিনটি ইউনিয়নে যমুনা নদীতে অসময়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত দুই মাসে নদীভাঙনে প্রায় ২ শতাধিক বাড়ি-ঘর ও ৩শ বিঘা ফসলি জমিসহ গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঘর-বাড়ি হারিয়ে অনেকেই খোলা আকাশের নিচে বাস করছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, ভাঙন কবলিত জালালপুর, খুকনি ও কৈজুরি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রাম থেকে হাটপাচিল পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে ভাঙনের তাণ্ডব। এতে ব্রাহ্মণগ্রাম, আরকান্দি, পাড়ামোহনপুর, জালালপুর, পাকুরতলা, সৈয়দপুর ও হাটপাচিল গ্রামের ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

নদী ভাঙনে সহায় সম্বল হারানো জালালপুর গ্রামের আব্দুস সালাম, আব্দুল হাই, পাকুরতলা গ্রামের আশরাফ আলী বলেন, অসময়ে নদীতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই একের পর এক গ্রামে ভাঙন চলছে। এতে নদীর পেটে চলে যাচ্ছে ফসলি জমিসহ বাড়ি-ঘর। ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছেন অনেকে। অনেকের দিন কাটছে খোলা আকাশের নিচে। অনেকে আবার অন্যত্র চলে যাচ্ছেন জীবিকার তাগিদে।

হাটপাচিল গ্রামের আব্দুল মজিদ ও নুরনবী বলেন, চোখের সামনে বাড়ি-ঘর রাক্ষসী যমুনার পেটে যাচ্ছে। দুচোখ দিয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারছি না আমরা। গত বর্ষা মৌসুমে স্থানীয় প্রভাবশালীরা নদী থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় বালু উত্তোলন ও বালুবাহী বাল্কহেড উচ্চ গতিতে চলাচল করায় তীব্র ঢেউয়ের আঘাতে নদীর পশ্চিম তীরের তলদেশে বালুর স্তর সরে যাওয়ায় ভাঙনের তীব্র আকার ধারণ করেছে।

ভাঙন কবলিত এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩ বছর আগে ভাঙনরোধে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড ৪৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। কিন্তু গত ৩ বছরে নামে মাত্র কিছু সিসি ব্লক তৈরি ছাড়া কাজের আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। ফলে সময় ও অসময়ে ভাঙনের কবলে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে স্থানীয়রা।

ভাঙনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছিলে সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের সংসদ সদস্য চয়ন ইসলাম। তিনি ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন এবং অসহায় মানুষের কষ্টের কথা শুনে দুঃখ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকায় সরকারের প্রকল্পের কাজ চলছে। তবে কিছু কিছু ঠিকাদার ঠিকমতো কাজ না করায় তাদের বিরুদ্ধে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে সিংহভাগ কাজ চলমান। আশা করি, চলতি বছরের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।

এ ছাড়া হাটপাচিল থেকে ঠুটিয়া স্কুল পর্যন্ত বাঁধ সংস্কার করা হবে। এ কাজ শেষ হলে আগামীতে শাহজাদপুরে কোনো ভাঙন থাকবে না বলে মনে করেন তিনি।

spot_img
এই বিভাগের অনান্য সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ