সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জে পৃথক দূর্ঘটনায় দুই কিশোরের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরো ১৫জন। তাদেরকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মৃতরা হলো- জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের চারাগাঁও এলসি পয়েন্ট এলাকার বাসিন্দা অকিল দাসের ছেলে শিশু শ্রমিক অনিন্দ্র দাস (১৩) ও দিরাইয়ে বরযাত্রী আসা হবিগঞ্জ জেলা সদরের ভূষন সরকারের ছেলে রাহুল সরকার (১৫)।
আজ মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টায় পৃথক স্থান থেকে পুলিশ মৃত দুই কিশোরের লাশ ময়না তদন্তের জন্য উদ্ধার করেছে। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- প্রতিদিনের মতো আজ মঙ্গলবার (৫ মার্চ) ভোর থেকে
জেলার তাহিরপুর উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের লামাকাটা, জঙ্গলবাড়ি, কলাগাঁও, চারাগাঁও এলসি পয়েন্ট, বাঁশতলা ও লালঘাট এলাকার দিয়ে গডফাদার তোতলা আজাদ তার সোর্স রফ মিয়া, স্বপন মিয়া, আইনাল মিয়া,
রিপন মিয়া, সাইফুল মিয়া, লেংড়া জামাল, বাবুল মিয়া, সোহেল মিয়া, আনোয়ার হোসেন বাবলু, সুলতান মিয়া, শরাফত আলী ও শামসুল মিয়াকে দিয়ে ভারত থেকে শিশু-কিশোর ও বৃদ্ধ শ্রমিকেদেরকে দিয়ে কয়লা, মদ,
ইয়াবা, চিনি ও চুনাপাথর পাচাঁর শুরু করে। এমতাবস্থায় দুপুর ২টায় চোরাই কয়লা ট্রলি বোঝাই করে শুল্কস্টেশনের বজলু মুন্সির ডিপুসহ বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন আশেপাশের বসতবাড়ি নিয়ে মজুত করার সময়
বেপরোয়া গতিতে একটি মিনি ট্রাক কিশোর অনিন্দ্র দাসকে চাপা দিলে সে গুরুতর আহত হয়। পড়ে স্থানীয়রা ওই কিশোরকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসক দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বিকেলে উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয়। এখবর জানাজানি হওয়ার পর উত্তেজিত জনতা ঘাতক ট্রাক আটক করে। কিন্তু গডফাদার তোতলা আজাদ তার সোর্স রফ মিয়া ও স্বপন মিয়াসহ তার চোরাচালান বাহিনী
নিয়ে সন্ধ্যায় আটক ট্রাকটি ছাড়িয়ে নেয়। চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার বিল্লাল কর্মরত থাকাকালীন এই সীমান্তে চোরাচালান বন্ধ ছিল। কিন্তু এক সপ্তাহ আগে এই ক্যাম্পে নায়েক সুবেদার আবু
রায়হান ও ভিআইপি যোগদানের পর থেকে চোরাকারবারী, চাঁদাবাজ ও তাদের গডফাদারের দৌড়াত্ব বেড়ে যায়।
এদিকে রাত ৮টায় শান্তিগঞ্জ উপজেলার গাগলী নামক স্থানে, হবিগঞ্জ থেকে অর্ধশতাধিক বরযাত্রী নিয়ে আসা
একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে খাদে পড়ে যায়। তারা দিরাই যাওয়ার সময় এই দূর্ঘটনাটি ঘটে। এঘটনায় বাসে থাকা বরযাত্রী কিশোর রাহুল সরকারসহ আরো ১৫জন যাত্রী আহত হয়। তাদেরকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে
রাতেই সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। পরে গুরুতর আহত কিশোর রাহুল সরকারের মৃত্যু হয়। এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ সাইফুল
ইসলাম, শান্তিগঞ্জ থানার ওসি মোক্তাদির হোসেন ও তাহিরপুর থানার ওসি কাজী নাজিম উদ্দিন পৃথক ঘটনায় দুই কিশোরের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।