কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তা নদীতে নৌকাডুবিতে ১৯জনকে জীবিত ও আয়শা সিদ্দিকা নামে ১৪ মাস বয়সী এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত শিশু বজরা মিয়াজীপাড়া গ্রামের আজিজার
রহমানের মেয়ে। জীবিত উদ্ধার ১৯ জনের মধ্যে চর বজরা মিয়াজীপাড়া গ্রামের আজিজুর রহমান, তার স্ত্রী চায়না বেগম, কয়জল হকের স্ত্রী শরিফা বেগম, চর বজরা গ্রামের আমজাদ হোসেনের স্ত্রী আন্জুআরা বেগম ও
রুহুল আমীনের স্ত্রী রাশেদা বেগম উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে বৃহস্পতিবার(২০ জুন) সকালে বাড়ি ফিরে গেছেন। জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বজরা ইউনিয়নের চর বজরা গ্রামের
কয়জলের মেয়ে পলি বেগমের স্বামীর বাড়ী পীরগাছা উপজেলার পাওটানায় দাওয়াতে যেতে চর বজরা গ্রামের জনৈক মোফাজ্জল হোসেনের ইঞ্জিন চালিত নৌকা যোগে ২৬ জন যাত্রী নিয়ে চর বজরা ঘাট থেকে রওনা হন।
নৌকাটি খামার দামারহাট রফিকুলের ঘাট সংলগ্ন তিস্তা নদীর পশ্চিম পাড়ের কাছাকাছি পৌঁছিলে প্রবল স্রোতের কারনে তিস্তা নদীর গভীর পানিতে ডুবে যায়। প্রত্যক্ষদর্শী কাজল সরদার, জাহাঙ্গীর আলম ও রুবেল মিয়া
জানায়, তাৎক্ষনিকভাবে স্থানীয় লোকজন সাথে নিয়ে অন্য একটি নৌকায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। সেখানে পানিতে জীবিত ভাসতে থাকা ১৯ জন ডুবে যাওয়া নৌকার যাত্রী ও ১৪ মাস বয়সী আয়শা সিদ্দীকা নামের এক
শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এঘনায় নিখোঁজ রয়েছেন ৬ জন। তারা হলেন- চর বজরা গ্রামের চান মিয়ার ছেলে মো. আনিছুর রহমান, তার স্ত্রী রুপালী বেগম ও কন্যা আইরিন আক্তার। ইউসুফ আলীর কন্যা হিরা মনি, বজরা মিয়াজীপাড়া গ্রামের কয়জল হকের আড়াই বছরের কন্যা কুলছুম আক্তার ও আজিজুর রহমানের পুত্র
রোকন মিয়া ওরফে রোকন(৬)। এ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য সৌমেদ্র প্রসাদ পান্ডে গবা, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ, পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম, পিপিএম।
উলিপুর ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন ইনচার্জ আব্বাস আলী জানান, নিখোঁজ ৬ জনকে উদ্ধারের জন্য ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে আছেন। নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে কার্যক্রম চলছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মেহেরুল ইসলাম জানান, বুধবার রাতে নৌকাডুবির ঘটনায় ৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তারা সবাই সুস্থ্য আছেন। সকালে তারা ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে চলে গেছেন।
উলিপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) তামবিরুল ইসলাম জানান, বুধবার রাতেই নৌকাডুবির অসুস্থ্য ব্যক্তিদের উদ্ধার করে দ্রুত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পৌঁছে দেয়া হয়। নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে পুলিশ, প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রম চলছে।
বৃহস্পতিবার(২০ জুন) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতাউর রহমান জানান, রাত থেকে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা চলছে। স্থানীয়দের দাবী অনুযায়ী নিখোঁজ ৬ জন ব্যক্তির সন্ধানে ফায়ার সার্ভিস-ডুবুরি দল, পুলিশসহ প্রশাসনের সকল ইউনিট উদ্ধার অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রেখেছেন।