বশির আলম, টঙ্গী পাইলট স্কুল এণ্ড গার্লস কলেজের দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের অপসারণ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন টঙ্গী পাইলট স্কুল এণ্ড গার্লস কলেজ গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য বাবুর আলী ও সাবেক ছাত্র আসাদ জামান।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকালে গাসিক ৫৩ নং ওয়ার্ড বড়দেওড়া বাবুর আলীর নিজ অফিস কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাবুর আলী বলেন, আপনারা অবশ্যই অবগত আছেন বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাচিপ) এর গাজীপুর শাখার সভাপতি এবং টঙ্গী পাইলট স্কুল এণ্ড
গার্লস কলেজ অধ্যক্ষের নজিরবিহীন অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সংবাদপত্রে একাধিক সত্য রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে। গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিজয় অর্জনের পর
থেকেই টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজের দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার সমর্থনে এলাকাবাসীও উক্ত দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের
কবল থেকে ঐতিহ্যবাহী টঙ্গী পাইলট স্কুল এণ্ড গার্লস কলেজ রক্ষায় গভর্নিং বডির সভাপতিও গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন। আমিও সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে এব্যাপারে সোচ্চার
ভূমিকা পালন করে আসছি। এতে প্রতিষ্ঠানটির দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন মিয়া আমাকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন আইডি ব্যবহার করে এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন ভুল তথ্য দিয়ে আমাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
আমার ও টঙ্গী পাইলট স্কুল এণ্ড গার্লস কলেজের সাবেক ছাত্র মো. আসাদ জামানের ছবি সম্বলিত ‘টঙ্গীতে কথিত বিএনপি নেতাদের হুমকি-ধমকিতে অতিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিক্ষকরা’ শীর্ষক ফেসবুকপোস্ট ও মিথ্যা কাল্পনিক সংবাদে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের মানহানি ঘটানো হচ্ছে।
এ ঘটনায় আমরা উভয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানায় পৃথক সাধারণ ডায়েরী করেছি। আমি কোন কারখানায় ঝুট ব্যবসার সাথে জড়িত নই, এ জন্য কাউকে হুমখি ধমকিও দিইনি। আসাদ জামানও একজন ব্যবসায়ী, তিনিও ঝুট ব্যবসায় জড়িত নন। পাইলট মার্কেটে গিয়ে কোন দোকানদারের কাছে তার ভাড়া চাওয়ার প্রশ্নই আসে না।
বরং দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ মার্কেটের দুটি সিঁড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন। ওই দুটি দোকান কিভাবে কিনেছে এবং কোন দলিলপত্র আছে কিনা তিনি তা জানতে চেয়েছেন মাত্র। এই তথ্য জানার অধিকার এলাকার প্রত্যেকটি নাগরিকের আছে। কিন্তু দোকান হস্তান্তরের প্রকৃত তথ্য প্রকাশ হলে দুর্নীতিবাজ অধ্য্যক্ষ আলাউদ্দিন মিয়া ফেঁসে যাবেন এই ভয়ে আসাদ জামানের বিরুদ্ধেও অপপ্রচারে নেমেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী আসাদ জামান বলেন, আমি গাসিক ৫৪ নং ওয়ার্ড আউচপাড়া এলাকার একজন স্থায়ী বাসিন্দা এবং টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজের সাবেক ছাত্র। গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিজয় অর্জনের পর থেকেই টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজের দুর্নীতিবাজ
অধ্যক্ষ অপসারণ ও দুর্নীতিবাজ ৬ জন শিক্ষকের অব্যাহতি চেয়ে যে দাবি জানানো হয় সে দাবি আদায়ের ছয় জন সমন্বয়েকের মধ্যে আমি একজন ছিলাম। আমরা সে আন্দোলনের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ ৬ জন শিক্ষককের অব্যাহতি চাইলে প্রিন্সিপালের মাধ্যমে তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অব্যাহতি দেওয়ার ১৫-২০ দিনের
মাথায় সে দুর্নীতিবাজ ৬ জন শিক্ষিককে আবার স্কুলে নিয়ে আসেন অধ্যক্ষ। তাদেরকে আবার স্কুলে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে অধ্যক্ষের নিকট জানতে চাই। এ ছাড়া টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ মার্কেটের দুটি সিঁড়ির বিক্রয় ও দুটি দোকান ক্রয় সংক্রান্ত ডিড ডকুমেন্ট দেখতে চাই । এই সকল ঘটনাকে কেন্দ্র করে সে আমাকে এবং একজন বয়োজ্যেষ্ঠ সম্মানী লোকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
এছাড়া বাবুর আলী সাহেব গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ৫৩ নং ওয়ার্ডের একজন কাউন্সিলর পদপ্রার্থী, তিনি যেন সামনে কাউন্সিলর নির্বাচনে দাঁড়াতে না পারে তার জন্য তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসকল অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে টঙ্গী পাইলট স্কুল এণ্ড গার্লস কলেজের দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের অপসারণের দাবি জানাই।