নোয়াখালীর সেনবাগে গৃহবধূ রাহেলা আক্তার প্রকাশ কুসুম (৩১) মৃত্যু হার্টএট্যাকের হয়েছে বলে স্বামীর বাড়ি লোকজন জানালেও গৃহবধূর পরিবারের দাবি এটি একটি হত্যাকান্ড।
জানাগেছে,মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) রাতে উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মইজদীপুর গ্রামের আবদুর রশিদ হালদার বাড়ির মোঃ হোসেন প্রকাশ বাচ্চু মিয়ার ছেলে বেলায়েত হোসেন প্রকাশ সাহাব উদ্দিন(৪০) স্ত্রী রাহেলা
আক্তার প্রকাশ কুসুম(৩১) মৃত্যুবরন করেন। রাত ১২টা ২৪ মিনিটে সাহাব উদ্দিনের মোবাইল থেকে তার ভাই কুসুমের পরিবারকে তাদের বাড়িতে যেতে বলেন, তখন কুসুমের মা বিবি খোদেজা ও মামা সেখানে গিয়ে কুসুমকে মৃত দেখতে পান।
পরে খবর পেয়ে টহলে থাকা সেনবাগ থানার এস আই গৌর সাহা পুলিশ নিয়ে সেখানে হাজির হন, এবং তিনি কুসুমের মা ও শাশুড়ীর সহযোগিতায় লাশের সুরতহাল করে লাশ থানায় নিয়ে আসেন, সাথে কুসুমের স্বামী সাহাব উদ্দিনকে
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসেন। বুধবার সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন। রাতে উভয় পরিবারের সম্মতিতে লাশ কুসুমের পিতার বাড়ি একই ইউনিয়নের মহিদীপুর গ্রামে দাফন করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই)দুুপুরে কুসুমের পিতার বাড়ি মহিদীপুর নুর মোহাম্মদের নতুন বাড়িতে এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে কুসুমকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তার পরিবার।
কুসুমের পিতা নুর মোহাম্মদ ও মা বিবি খাদিজা জানান ১৩ বছর পূর্বে সাহাব উদ্দিনের সাথে তাদের মেয়ের বিয়ে দেন, সে সময় বিদেশ যাওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা যৌতুক নেয়।
কিন্তু বিদেশ মেয়ের জামাই বিদেশ না গিয়ে পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় দেশে ব্যবসার কথা বলে কুসুমের বাবা,মার কাছ থেকে আরো প্রায় ৫ লক্ষ টাকা নেয় বলে তারা দাবি করেন।
এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় একাধিক সালিশ বৈঠক হয়েছে বলেও তারা জানান। এ ছাড়া কুসুমের ঘরে ওমর(৬) নামে একটা দত্তক ছেলে রয়েছে যাকে কুসুমের মৃত্যুর পর তারা কারো সাথে দেখা বা কথা বলতে দিচ্ছেনা বলেও তারা অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে জানতে মোবাইলে কুসুমের স্বামী সাহাব উদ্দিনকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন এটি একটি স্বাভাবিক মৃত্যু, পুলিশ আমার শাশুড়ির মাধ্যমেই সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন,তিনি শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাননি বলেই তখন জানান,এটুকু বলার পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং পরে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
লাশ উদ্ধার করা পুলিশের এসআই গৌর সাহা জানান খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলেে যাই এবং কুসুমের মা বিবি খাদিজাকে নিয়েই লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করি,তখন তিনি কোন আঘাতের চিহ্ন দেখেননি বলে জানান, তারপরও যেহেতু ময়নাতদন্ত হয়েছে তাই রিপোর্ট এলেই জানা যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেনবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা জানান লাশ উদ্ধার করে মময়নাতদন্ত করে উভয় পরিবারের উপস্থিতিতেই হস্তান্তর করা হয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা তার স্বামী সাহাব উদ্দিনকে স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল হক ছেরাজ ও মেয়ের মামার জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে, এখন তারা যদি অভিযোগ করেন বা না করলেও ময়নাতদন্তের রিপোর্টে হত্যাকান্ড প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।