শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪
spot_img
Homeসারাদেশঢাকাবঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে মানুষের সেবা করতে চাই যুবলীগ নেতা বিল্লাল হোসেন...

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে মানুষের সেবা করতে চাই যুবলীগ নেতা বিল্লাল হোসেন মোল্লা

শোকাবহ আগস্টে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কর্র্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী সারা বাংলাদেশে যুবলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গাজীপুর মহানগর যুবলীগ নেতা বিল্লাল হোসেন মোল্লা মাসব্যাপী দোয়া মাহফিল, বৃক্ষরোপন, অক্সিজেন, এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, খাদ্যসামগ্রী বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। এক সাক্ষাৎকারে এ প্রতিবেদককে জানান, বঙ্গবন্ধুকে দেখিনি।

কিন্তু ইতিহাস ও পারিবারিক শিক্ষা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি অনুপ্রাণীত হয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক ভাওয়াল বীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের আদর্শ বুকে লালন করে আওয়ামীলীগের একজন কর্মী হয়ে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে সেবামূলক কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি ১৫ই আগস্টের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, মানব সভ্যতার ইতিহাসে অন্যতম ঘৃণিত ও নৃশংস হত্যাকা-ের একটি দিন ১৫ আগস্ট। মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত ঘাতক চক্র সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এই দিনে সপরিবারে হত্যা করে।

হাজার বছরের নির্যাতিত-নিপীড়িত পরাধীন বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন হয়। পর্বতসম সাহস আর সাগরের মতো হৃদয়ের অধিকারী শেখ মুজিব জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঙালিকে ঔপনিবেশিক পাকিস্তানের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করেছিলেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন, শেখ মুজিব নিহত হবার খবরে আমি মর্মাহত। তিনি একজন মহান নেতা ছিলেন। তার অনন্য সাধারণ সাহসিকতা এশিয়া ও আফ্রিকার জনগণের জন্য প্রেরণাদায়ক ছিল।

ব্রিটিশ লর্ড ফেন্যার ব্রোকওয়ে বলেছিলেন, ‘শেখ মুজিব জর্জ ওয়াশিংটন, গান্ধী এবং দ্য ভ্যালেরার চেয়েও মহান নেতা। ’
১৯৪৭ সালে ভ্রান্ত দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান নামক অসম রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। বৃটিশ শাসনের অবসান হলেও স্বাধীন সত্তা নিয়ে সেদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি বাঙালি জাতি। বাঙারির ওপর চেপে বসে পাকিস্তান রাষ্ট্রযন্ত্রের শাসন, শোষণ, অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপীড়ন।

সেই নির্যাতিত বাঙালিকে সংগঠিত করে স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে ধাবিত করেন শেখ মুজিব। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শেখ মুজিব হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, ভূষিত হন বঙ্গবন্ধু উপাধিতে। আন্দোলন-সংগ্রামের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে অত্যাচার, নির্যাতন, জেল-জুলুম সহ্য করতে হয়। বারবার তাকে হতে হয় মৃত্যুর মুখোমুখি।

বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ এ দেশের মুক্তিকামী মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এদিন তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দিলে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ।

৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের বিজয় অর্জিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাঙালি অধিষ্ঠিত করে তাদের জাতির পিতার আসনে। বিশ্ববাসীর কাছেও বঙ্গবন্ধু পরিচিত হয়ে ওঠেন নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের নেতা হিসেবে।

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতে কিউবার কিংবদন্তি বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো বলেছিলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব, সাহসিকতা ও নির্ভীকতায় এই ব্যক্তি হিমালয়। ’

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ফিদেল কাস্ত্রো বলেছিলেন, ‘শেখ মুজিবের মৃত্যুতে বিশ্বের শোষিত মানুষ হারালো তাদের একজন মহান নেতাকে, আমি হারালাম একজন অকৃত্রিম বিশাল হৃদয়ের বন্ধুকে। ’

স্বাধীনতার পর দেশ পরিচালনায় বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী পদক্ষেপে বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে থাকে। বঙ্গবন্ধুর এই সফলতা ও উন্নতির দিকে এগিয়ে যাওয়ার গতি বুঝতে পেরেই স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা ঠা-া মাথায় তাকে খুন করে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে সেনাবাহিনীর বিপথগামী একটি দল হানা দেয়। এ সময় তারা বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সবাইকে একে একে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর শিশুপুত্র শেখ রাসেলও সেদিন ঘাতকের হাত থেকে রেহাই পায়নি। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা এবং কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় তারা প্রাণে বেঁচে যান।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতি- ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত হয়। স্বাধীনতার চেতনা ও মূল্যবোধকে পদদলিত করে উল্টো পথে সেই পাকিস্তানি ভাবধারার দিকে ধাবিত হয় বাংলাদেশ। আবারও বাঙালির ঘাড়ে জেঁকে বসে সামরিক স্বৈরশাসন।

স্বাধীনতার পর জাতির অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি গ্রহণ করেন। তাকে হত্যার পর তার গৃহীত পদক্ষেপগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। দেশে হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়ে যায়। ষড়যন্ত্র, পাল্টা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একের পর এক সামরিক স্বৈরশাসনের পালা বদল হতে থাকে।

সেই সঙ্গে সামরিক স্বৈরশাসকদের ছত্রছায়ায় দেশে স্বাধীনতাবিরোধী পরাজিত গোষ্ঠী, উগ্র সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী জঙ্গি গোষ্ঠীর উত্থান ঘটে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাঙালির স্বাধীনতা, স্বাধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির আন্দোলনে এবং স্বাধীনতা পরবর্তী দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধু ছিলেন নিবেদিত প্রাণ।

তার অতুলনীয় গণমুখী নেতৃত্বে বাঙালি জাতি দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম ও ৫২, ৬২, ৬৬, ৬৯ এর চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ৭০-এর নির্বাচনে বিজয় এর পর ১৯৭১-এ এসে উপনীত হয়।

৭১-এর ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণে বাঙালিকে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। ’ বঙ্গবন্ধুর এই ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে প্রস্তুত হয় বাঙালি। ২৬ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে ৪ বছরের মাথায় মহান এই নেতাকে হত্যা করা হয়। ১৫ আগস্ট ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম এই হত্যাকা-ের আরও শিকার হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ দেশবরেণ্য সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণি, বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি ও তার মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য কৃষক নেতা আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ শিশুপুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত আবদুলাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুল নঈম খান রিন্টু, বঙ্গবন্ধুর জীবন রক্ষায় এগিয়ে আসা বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা অফিসার কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ। স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও জাতির পথপ্রদর্শক হিসেবেই আজ বঙ্গবন্ধু তাদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন।

spot_img
এই বিভাগের অনান্য সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ