মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া- সুনামগঞ্জে ৯ শর্তে ৭০ জন শিশুকে মুক্তি দিয়েছে আদালত। এসব শিশুদের বিরুদ্ধে চুরি, মারামারি ও পারিবারিক সহিংসতাসহ নানান অপরাধে থানা ও আদালতে ৫০ মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
আজ সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক মোহাম্মদ জাকির হোসেন অভিযুক্ত শিশুদেরকে সুন্দর জীবনে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য ৯ শর্তে মুক্তি দেন।
পরে মুক্তিপ্রাপ্ত শিশুদের হাতে জাতীয় পতাকা, ফুল ও ডায়রি তুলে দেন ওই বিচারক।
আদালত কর্তৃক শর্তগুলো হলো- (১) নিয়মিত পড়ালেখার পাশাপাশি ভালো কিছু করা এবং তা ডায়রীতে লিখে রাখা, (২) মুক্তিযোদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানা, (৩) সবার সাথে সু-সম্পর্ক রাখা ও
ভাল ব্যবহার করা, (৪) বাবা-মা সহ গুরুজনদের আদেশ নির্দেশ মেনে চলা ও বাবা-মায়ের সেবা যতœ ও কাজে সাহায্য করা, (৫) নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা ও ধর্মকর্ম পালন করা, (৬) প্রক্যেকে
কমপক্ষে ২০টি করে গাছ লাগানো ও গাছের পরিচর্যা করা, (৭) অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করা, (৮) মাদক থেকে দূরে থাকা ও (৯) ভবিষ্যতে কোন অপরাধের সাথে নিজেকে না জড়ানো।
আর এই শর্তগুলো শিশুরা পালন করছে কিনা তা পর্যবেক্ষনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুনামগঞ্জ জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা শফিউর রহমানকে। এব্যাপারে তিনি বলেন- আদালতের ব্যতিক্রমী রায়ে
সবাই আনন্দিত। এই রায়ের মাধ্যমে বিপদগামী শিশুরা তাদের অনিশ্চিত জীবনকে সুন্দর ভাবে সাজানোর সুযোগ পেয়েছে।
আমি আদালতের নির্দেশ মতো শিশুদের সব সময় নজরদারীতে রাখব। তারা আদালতে শর্তগুলো সঠিক ভাবে পালন করছে কিনা তা নিয়মিত খতিয়ে দেখব।
এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের পিপি নান্টু রায় সাংবাদিকদের বলেন- ৫০ টি মামলায় ৭০জন শিশু দীর্ঘদিন যাবত আদালতে হাজিরা দিতে হয়েছে।
অনেকেই জেল খেটেছে। এসব নানান সমস্যায় তাদের সুন্দর জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে গিয়েছিল। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক শর্ত সাপেক্ষে যে রায় দিয়েছেন তা প্রতিটি শিশুর জীবনে সুফল বয়ে আনবে। আদালতের রায়ে শিশু ও তাদের পরিবারের সদস্যরা খুবই সুন্তুষ্ঠ।