রতন মিয়া নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলায় ঈদ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী উপহার ভিজিএফ ১২৮ বস্তা প্রায় চার মেট্টিক টন চাউল চালসহ ইঞ্জিন চালিত মালবাহী নৌকা আটক করেছে স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের সাথে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে নৌকার মাঝি ও লোকদের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। নৌকায় থাকা তিনজনের মধ্যে গজারমারি এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে আরমান (১৯) নামে
একজনকে আটক করে পুলিশে সোপার্দ করে স্থানীয়রা। একই এলাকার দুদু মিয়ার ছেলে জজ মিয়া নামে একজন গণধোলাইয়ের শিকার হন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। আরেকজন পালিয়ে যান। তার পরিচায় পাওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবার আনুমানিক রাত সাড়ে ১০.৪৫ মি. দিকে কলমাকান্দা উপজেলার ৬ নং খারনৈ ইউনিয়নের মেদিরকান্দা এলাকার মেদিখালের ব্রিজের কাছ থেকে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে নৌকাটি আটক করে। স্থানীয়রা জানায় নৌকাটি আটকের সময় নৌকায় থাকা লোকজন অনেক বস্তা চাল পানিতে ফেলে দিয়েছে।
নৌকায় থাকা যুবক আরমান এসময় স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে খারনৈ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের চাল ও ৩০ কেজি ওজনের পাঁচশো বস্তা চালের কথা প্রাথমিকভাবে স্থানীয়দের কাছে স্বীকার করেছে। তবে কোথা থেকে ও কোথায় যাবে তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন ঐ যুবক ।
খারনৈ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ওবায়দুল হক তার ওপর আরোপিত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমি এই চাল কেন নিব। ট্যাগ অফিসার ছিল, আমরা বিতরণ করেছি।
আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। দুপুরের দিকে যখন ঝগড়া হয়েছে। তখন সেনাবাহিনীর লোকেরা এসে ভূক্তভোগীদের চাল মেপে দেখেছে। যে পরিমান চালের কথা শুনছি তা-তো আমার ঘরেই ছিল না।
তাহলে এই চাল আমি দিব কোথা থেকে। নৌকার মাঝি আমাকেও চিনে না, আমিও তাকে চিনি না। আমার বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে। ট্যাগ কর্মকর্তা অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি মাস্টাররোলে স্বাক্ষর না করেই চলে গেছেন।
এখানে তো সেনাবাহিনীর লোকেরাও ছিল। ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে আমরা বিতরণ করেছি। আমার এখানে ১৫ বস্তা চাল মজুদ রয়েছে। এখান থেকে তিন কি.মি. দূরত্বে নৌকা আটক করা হয়েছে। কারা কলমাকান্দা থেকে চাল এনে এ ঘটনা ঘটিয়েছি এটা তো আমি জানি না।
দুপুরে দিকে চাঁন মিয়া, হাসেম, জামালসহ কয়েকটা ছেলে এসে কার্ড বিক্রি করতে পারে নাই। পরে ঝগড়া করেছে। তারাই ঘটনা ঘটিয়েছে এবং এর জের ধরে এই নাটক সাজিয়েছে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ কর্মকর্তা উপজেলার একাডেমিক সুপারভাইজার মো. তারিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, সারাদিন চাল বিতরণের পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চলে আসি।
দুই ট্যাগে ২৮ বস্তা ও এক-দুই বস্তা খোলা অবস্থায় ছিল তা দেখে এসেছিলাম।’ আপনার উপস্থিতি ছাড়া চাল বিতরণ ও মাস্টার রোল তৈরি করার নিয়ম নেই এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘তা ঠিক আছে, পুলিশও ছিল তাদের উপস্থিতিতে চাল বিতরণ করে থাকতে পারে।
তবে মাস্টাররোলে আমি স্বাক্ষর ছাড়াই চলে আসি।’ কলমাকান্দা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খোকন কুমার সাহা সাংবাদিকদের বলেন, নৌকায় ৩০ কেজি ওজনের ১২৮ বস্তা চাল পাওয়া গেছে। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল হাসেম মেদি খাল থেকে ভিজিএফের চাল উদ্ধারে সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন, জানা যাচ্ছে বাউসাম এলাকার থেকে চাল আনা হয়েছে।
লোকজন আটক করার পর পুলিশ নিয়ে উপস্থিত হই। স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত ছিল। পরে জব্দ করে পুলিশের হাতে দিয়ে আসা হয়েছে। থানায় মামলা করা হয়েছে।
Attachments area