শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
spot_img
Homeসারাদেশরংপুরকুুড়িগ্রামের উলিপুরে নির্ধারিত ভাড়ায় চলছে না সরকারি অ্যাম্বুলেন্স

কুুড়িগ্রামের উলিপুরে নির্ধারিত ভাড়ায় চলছে না সরকারি অ্যাম্বুলেন্স

হাফিজুর রহমান সেলিম, কুড়িগ্রামের উলিপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সের চালকের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কয়েকগুণ অতিরিক্ত টাকা অসহায় রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে নিচ্ছেন অ্যাম্বুলেন্স চালক। এ ঘটনায় পরিবার পরিকল্পনার কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন

ভুক্তভোগী। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি প্রকাশ্যে হলেও স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা দেখেও না দেখার ভান করছেন।

এছাড়া সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স চালকদের রোগী দিয়ে তাদের কাছ থেকেও কমিশন আদায় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, উলিপুর

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে রোগী পরিবহনে জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। এই অ্যাম্বুলেন্সের চালক মমিনুল ইসলাম মন্টু।

তিনি এক যুগ থেকে উলিপুরে কর্মরত রয়েছেন। সরকার নির্ধারিত অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া প্রতি কিলোমিটার ২০ টাকা। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী ১ কিলোমিটারের জন্য ভাড়া ২০ টাকা।

সে হিসাবে উলিপুর থেকে কুড়িগ্রাম সরকারি হাসপাতালের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার, ভাড়া ৩৬০ টাকা অথচ অ্যাম্বুলেন্স চালক মমিনুল ইসলাম মন্টু আদায় করছেন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা।

উলিপুর থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজের দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার, ভাড়া ১ হাজার ২ শত টাকা অথচ আদায় করছেন ১হাজার ৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকা। এ ঘটনায় পরিবার পরিকল্পনার কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী।

উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের সোহেল নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, আমার আত্বিয় গুরুত্বর ভাবে দূর্ঘটনার শিকার হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় ছিল। উলিপুর থেকে তাকে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে রংপুর

মেডিকেলে নিয়ে যাই। সেখানে যাওয়ার পর ড্রাইভার মমিনুল আমার কাছে ১ হাজার ৮শ’ টাকা দাবী করেন। আমি ১ হাজার ৪শ’ টাকা দিতে চাইলেও ড্রাইভার তা গ্রহন করেনি।

এ সময় ড্রাইভার রোগী আটকিয়ে জোর পূর্বক আমার কাছে ১ হাজার ৮শ’ টাকা আদায় করেন।
পৌরসভার আব্দুল মান্নান মিয়া নামের একজন বলেন, আমার শিশুবাচ্চা গুরুত্বর অসুস্থ্য হলে তাকে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স যোগে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই।

ড্রাইভারকে ভাড়া বাবদ ৪শ’ টাকা দিতে চাইলেও নিতে চায়নি পরে বাধ্য হয়ে ৮শ’ টাকা দেই।
তবকপুর ইউনিয়নের সাদুল্ল্যা এলাকার এরশাদ নামের এক রোগীর ছোট ভাই বলেন, আমার বড়

ভাই আব্দুর রহমান গুরুত্বর অসুস্থ্য হলে তাকে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে করে রংপুর মেডিকেলে নিয়ে যাই। এরপর ড্রাইভার আমাদের কাছে ১ হাজার ৯শ’ টাকা ভাড়া আদায় করেন।

ধামশ্রেনী ইউনিয়নের হাসান আলী নামের এক রোগীর স্বজন অভিযোগ করে বলেন, আমার এক ভাই ট্রলিতে দূর্ঘটনার শিকার হন। তাকে উলিপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে কুড়িগ্রামে

নেয়ার জন্য বলেন। এ সময় আমি অ্যাম্বুলেন্স চালককে ৪শ’ টাকা ভাড়া দিতে চাইলেও তিনি রাজি হননি। পরে বাধ্য হয়ে অসুস্থ্য রোগীকে অটোযোগে কুড়িগ্রামে নিয়ে যাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সের চালক বলেন, সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চালক মমিনুল ইসলাম আমাদের রোগী দিলে তাকে কুড়িগ্রামের জন্য ১০০ টাকা ও রংপুরের জন্য ২০০ টাকা করে প্রতি ভাড়ার জন্য কমিশন দিতে হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক মমিনুল ইসলাম মন্টু বলেন, আমাদের তেলের পারমিশন উলিপুর থেকে নেই। আমার হিসাব হয় কুড়িগ্রাম থেকে। তাই

কুড়িগ্রামের ভাড়া ৭শ’ টাকা ও রংপুরের ভাড়া ১শ’ ৮শ’ নেয়া হয়। কমিশন ও জোর পূর্বক টাকা আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মেশকাতুল আবেদ অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের প্রেরীক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

spot_img
এই বিভাগের অনান্য সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ