উল্লিখিত আয়াতে মুমিনের জন্য কয়েকটি শিক্ষা রয়েছে—এক. মুমিন কখনো নিজেকে নির্দোষ বলে প্রচার করবে না, দুই. পাপ পরিহারে সক্ষম হলে গর্ব করবে না, তিন. পাপ থেকে আত্মরক্ষার পর আল্লাহর কৃতজ্ঞ আদায় করবে, চার. আল্লাহর কাছে পাপমুক্ত জীবন প্রার্থনা করবে, পাঁচ. পাপ হয়ে গেলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে এবং তাঁর অনুগ্রহ লাভের আশা রাখবে। যেমনটি করেছেন ইউসুফ (আ.)। তিনি নির্দোষ হওয়ার দাবিটি এমনভাবে করেছেন যে তাতে আল্লাহর অনুগ্রহ ও কৃপার প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতাবোধ পুরোপুরি স্পষ্ট হয়েছে।
নিজেকে নির্দোষ দাবি করা
আত্মমুগ্ধতা থেকে যদি মানুষ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে, তবে তা ইসলামের দৃষ্টিতে নিন্দনীয়। কেননা তা গর্ব ও অহংকারের অন্তর্ভুক্ত। তবে আদালতে ব্যক্তি নিজেকে নির্দোষ দাবি করতে পারবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনি কি তাদের দেখেন না, যারা নিজেরাই নিজেদের শুচিশুদ্ধ বলে? বরং আল্লাহরই অধিকার আছে, তিনি যাকে ইচ্ছা শুচিশুদ্ধ সাব্যস্ত করবেন।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৪৯)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা নিজের শুচিতা নিজে দাবি কোরো না। আল্লাহরই সম্যক জ্ঞাত আছেন, কে বাস্তবিক পরহেজগার ও আল্লাহভীরু।’ (সুরা : নাজম, আয়াত : ৩২)
তবে যখন নিজের সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থান, নিজ সম্প্রদায়ের মর্যাদার প্রশ্ন এসেছে এবং জাগতিক শাস্তির আশঙ্কা তৈরি হয়, তখন মুমিন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের যথাযথ ব্যবস্থা করবে। ইউসুফ (আ.) এমনটিই করেছিলেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘রাজা বলল, তোমরা ইউসুফকে আমার কাছে নিয়ে এসো। যখন দূত তার কাছে উপস্থিত হলো, তখন সে বলল, তুমি তোমার প্রভুর কাছে ফিরে যাও এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করো, যে নারীরা নিজ হাত কেটে ফেলেছিল তাদের কী অবস্থা। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক তাদের ছলনা সম্পর্কে অবগত। রাজা নারীদের জিজ্ঞাসা করেছিল, যখন তোমরা ইউসুফের কাছে অসৎকর্ম কামনা করেছিলে, তখন তোমাদের কী হয়েছিল? অদ্ভুত আল্লাহর মাহাত্ম্য, আমরা তার মধ্যে কোনো দোষ দেখিনি। আজিজের স্ত্রী বলল, এতক্ষণে সত্য প্রকাশ হলো। আমিই তাকে কুপ্ররোচনা দিয়েছিলাম, সে সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।’ (সুরা : ইউসুফ, আয়াত : ৫০-৫১)