সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে সুবিধা দেয়ার কথা বলে প্রত্যন্ত এলাকার সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ৭৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বাবু মন্ডল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
স্থানীয় প্রতিমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে এবং আওয়ামীলীগের নাম ভাঙিয়ে গ্রামের সহজ সরল মানুষকে প্রতারিত করছে এই বাবু মন্ডল।
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা, চর শৌলমারী ও বন্দবের ইউনিয়নের নিরিহ লোকজন নিজেদের ছাগল-গরু বিক্রি ও ঋণ করে এসব টাকা তুলে দেয় বাবু মন্ডলের হাতে।
টাকা দিয়ে সুবিধা না পাওয়ায় হতাশ ভুক্তভোগীদের পক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর পক্ষে মোকছেদ আলী। এসময় কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে মোকছেদ আলী বলেন, বর্তমান সরকারি দলের নাম ভাঙ্গিয়ে রৌমারী শহরের মন্ডলপাড়া গ্রামের অধিবাসী মোশাররফ মন্ডলের পূত্র বাবু মন্ডল চর ও প্রত্যন্ত এলাকার অসহায় মানুষজনকে সুবিধা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৭২ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা উৎকোচ নিয়েছে।
এরমধ্যে ১৯১টি পাকা ঘর নির্মাণের জন্য ৪৭ হাজার ৩৮ হাজার টাকা, ৭৪৩টি পরিবারে ভিজিডি সুবিধা দেয়ার জন্য ১৪ লক্ষ ৮৬হাজার টাকা, যত্ন প্রকল্পে ৪৭৫জনকে সুবিধা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৭ লক্ষ টাকা, বয়স্ক ও বিধবা ভাতার জন্য ৩ লক্ষ টাকা এবং ৭২টি পরিবারে সোলার সুবিধা দেয়ার কথা বলে ৭২হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন। এজন্য তিনি বিভিন্ন গ্রামে তার মনোনিত লোকজনের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয় বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী সুরাইয়া বেগমের নাম ভাঙ্গিয়ে তার দূর সম্পর্কের চাচাতো ভাই বাবু মন্ডল এসব অবৈধ অর্থ গ্রহন করেন। পরে কাজ না হওয়ায় টাকা ফেরৎ চাইলে নানান টালবাহানা শুরু করে বাবু মন্ডল।
এ ব্যাপারে বিভিন্ন জনের কাছে দেনদরবার করে টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোন অর্থ ফেরৎ প্রদান করেননি।
এর স্বপক্ষে টাকা প্রদানকারী সুবিধাভোগীদের ভিডিও বক্তব্য এবং স্টাম্পে স্বাক্ষরের ফটোকপি সাংবাদিকদের কাছে সরবরাহ করা হয়। ভুক্তভোগীরা অর্থ ফেরতের জন্য জেলা প্রশাসক ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন বলে জানান।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সাংসদ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, বাবু মন্ডলের সাথে আমার পরিবারের কোন সম্পর্ক নেই। অভিযোগ পাওয়ার পর আমি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ প্রদান করেছি।
এ ব্যাপারে বাবু মন্ডল সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন। এরপর নানাভাবে চেষ্টার পর তিনি প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করেন। এরপর অভিযোগের স্বপক্ষে তথ্য তুলে ধরলে তিনি জানান, সামান্য টাকা লোনদেন হয়েছে। যা স্বল্প সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা হয়।