মো: বশির আলম,টঙ্গীতে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে শিক্ষাঙ্গন। দীর্ঘদিন পর চিরচেনা শ্রেণিকক্ষে ফিরেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার টঙ্গীর সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এন্ড কলেজ শিক্ষার্থীরা চিরচেনা সেই স্কুল ড্রেস আর কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ছুটে এসেছে বিদ্যালয়ে।
উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে তারা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশধারে বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো: ওয়াদুদুর রহমানের নেতৃত্বে শিক্ষক প্রতিনিধি টিম ও স্কাউট সদস্যরা ফুল নিয়ে সাড়িবদ্ধভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দ্বিতীয় দিনের মতো ছাত্রছাত্রীদের বরণ করে। এ সময় স্কুল ফটকে শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা মাপা হয়।
সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার, মাক্স বিতরণ, চকলেট উপহার গান বাজিয়ে বাধ্যতালে সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শ্রেণি কক্ষে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করে।
টঙ্গী সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী মুন্নী আক্তার, দশম শ্রেণির ছাত্রী তামান্না আক্তার, ফাতেমা আক্তার জানায়, দীর্ঘদিন পর স্কুলে ফিরতে পেরে তারা খুবই আনন্দিত।
তারা পরীক্ষার জন্য স্কুলের অনালাইন ক্লাসের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করে সিলেবাস অনুসারে নিজেদেরকে ভালো ভাবে প্রস্তুত করেছে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার মতো মানসিকভাবে প্রস্তুত আছে এমনটাই জানান। সকাল ৭টা থেকে শুরু করে বিকেল ৩টা পর্যন্ত দুই সিফটে পাঠদান কার্যক্রম চলছে।
একই স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী ফাতেমা বলেন, ‘স্কুলে এসে ক্লাস করতে না পেরে মনে হয় হাপিয়ে উঠেছিলাম। পড়াশুনাও তেমন মনোযোগ দিয়ে করতাম না। এক সময় মনে হতো স্কুল ছুটি হলে ভালো হয়।
কিন্তু এখন মনে হচ্ছে স্কুল চালু হলেই ভালো হয়। মনে হচ্ছে করোনা ভাইরাস আমাদের জন্য অভিশাপ হয়ে এসেছে। অনেকের সঙ্গে ফোনে কথা হলেও তেমন দেখা হতো না। স্যার ও বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়ে অনেক ভাল লেগেছে।
স্কুলে প্রবেশের সময় হ্যান্ডস্যানিটাইজার দেওয়া এবং তাপমাত্রা মেপে ক্লাসে যেতে হয়েছে। স্কুল চালু হওয়ায় এখন পড়াশুনায় বেশি বেশি মনযোগ দিতে হবে।’
টঙ্গী সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এন্ড কলেজ অধ্যক্ষ মো: ওয়াদুদুর রহমান বলেন, স্কুল কলেজ খোলা সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্কুলের পরিবেশ পরিদর্শনে আসেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ শাহরিয়ার মেনজিস গত ১০ সেপ্টেম্বর।
বিদ্যালয় পরিদর্শন শেষে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে পরিদর্শক বইতে লেখেন যাহা দেখিলাম, শুনিলাম তাহাতে আমি অভিভূত। সুযোগ্য প্রতিষ্ঠান প্রধানের ব্যতিক্রমধর্মী নেতৃত্ব অন্য সবার জন্য অনুকরনীয় হয়ে থাকবে। আমি প্রতিষ্ঠানটির সর্বাঙ্গীন উন্নতি কামনা করি। ওয়াদুদুর রহমান আরো বলেন, বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আইসোলেশন সেন্টার খোলা রাখা হয়েছে।
সেখানে চিকিৎসা বেড ও সরঞ্জামাদী রাখা আছে। একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।‘শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে প্রবেশের পূর্বে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেওয়া হয়েছে এবং তাপমাত্রা মাপা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে যারা সহযোগিতা করেছেন তারা হচ্ছেন-প্রভাতী শাখার সহকারী প্রধান জাহান আরা বেগম, দিবা শাখার সহকারী প্রধান মজিবুর রহমান, সিনিয়র শিক্ষক আবুবকর সিদ্দিক, রতন কুমার ঘোষ, গোলজার হোসেন
আকন্দ, সুরুজ্জামান মাষ্টার চৌধুরী আশরাফ হোসেন, আশরাফ আলী, আলতাফ হোসেন, রিনা রানী গাঙ্গুলী, ফাতেমাতুজহুরা, সেলিনা সুলতানা, মেহেদী হাসান, আবুল কালাম আজাদ, সবীর হোসেন, তোফাজ্জল হোসেন, বেলাল
হোসেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ¦ মো: গিয়াস উদ্দিন সরকার, আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক আব্দুল বাছেদ খান প্রমুখ।