মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া-সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার চারাগাঁও, বাগলী ও বড়ছড়া সীমান্তে ৩টি শুল্কস্টেশন থাকার পরও চোরাকারবারীরা সিন্ডিকেডের মাধ্যমে প্রতিদিন লক্ষলক্ষ
টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে কয়লা, পাথর, কাঠ, গাছ, গরু, ঘোড়া, কমলা, বিড়ি, হুন্ডিসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র পাচাঁর করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে রমজান আলী (২৫) নামের একজন চোরাকারবারীকে কারাঘারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
সে জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বীরেন্দ্রনগর গ্রামের পাষান আলীর ছেলে। গতকাল বুধবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে বিজিবি অভিযান চালিয়ে ভারতীয় ৫ হাজার রুপীসহ
চোরাকারবারী রমজান আলীকে রঙ্গাছড়া এলাকা থেকে আটক করা হয়। পরে রাতেই তাকে থানায় হস্থান্তর করে মামলা দায়ের করেছে বিজিবি।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- জেলার তাহিরপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত পাচাঁরকৃত অবৈধ মালামাল থেকে প্রশাসন ও সাংবাদিকদের নাম ভাংগিয়ে চাঁদা উত্তোলন করছে
বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারীরাসহ তাদের দুইজন গডফাদার। পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে কয়লা, মদ ও ইঞ্জিনের নৌকাসহ বালিয়াঘাট গ্রামের চোরাকারবারী রুহুল আমিন, জাফর আলী, জাকির
হোসেন, জয় হোসেন ও লাকমা গ্রামের চোরাকারবারী ছিদ্দু মিয়া, হেলাল মিয়াকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিছে।
এঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশ বাদী হয়ে চারাগাঁও, লালঘাট ও লাকমা গ্রামের চোরাকারবারী বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী ইয়াবা কালাম মিয়া, তার সহযোগী খোকন মিয়া, মানিক মিয়া, জামাল মিয়া, রতন
মহলদার, শরীফ মহলদার, কামরুল মিয়া, তরিকুল ইসলাম, মোক্তার মহলদার, ফেরদৌস মিয়া, মানিক মহলদারসহ গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে থানায় পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কিন্তু বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে সাংবাদিক, পুলিশ ও বিজিবির নাম ভাংগিয়ে ভারত থেকে পাচাঁরকৃত অবৈধ মালামাল ও ইঞ্জিনের নৌকা হতে বিভিন্ন হারে চাঁদা উত্তোলনকারী
চোরাকারবারীদের সর্দার জিয়াউর রহমান জিয়া, ইয়াবা কালাম মিয়া, রমজান মিয়া, শফিকুল ইসলাম ভৈরব, লেংড়া জামাল, একদিল মিয়া, হরমুজ আলী, রহমত আলী, কুদ্দস মিয়া, শহিদুল্লাহ,
বাবুল মিয়া, হারুন মিয়া, আজিজ মিয়া, সাজু মিয়া, কাসেম মিয়া, কামাল মিয়া, আবু বক্কর, আলমগীর, রফিকুল ইসলাম, এরশাদ মিয়া ও জজ মিয়াগং সহ তাদের দুই গডফদার আইনের আওতায় না আসার করণে বন্ধ হচ্ছেনা সীমান্ত চোরাচালান।
বর্তমানে তারা উপজেলা বালিয়াঘাট, চারাগাঁও, টেকেরঘাট, চাঁনপুর, লাউড়গড় ও বীরেন্দ্রনগর সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিদিন অবৈধ ভাবে কয়লা ও পাথরসহ মদ, গাঁজা, ইয়াবা, কমলা, বিড়ি, কাঠ,
গরু, ঘোড়া ও অস্ত্র পাচাঁর করে ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে যাদুকাটা ও পাটলাই নদীপথে নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা পাঠাচ্ছে।
তাই সীমান্ত চোরাচালান ও চাঁদাবাজি চিরতরে প্রতিরোধের জন্য সোর্স পরিচয়ধারী ও তাদের ২ গডফাদারকে শীগ্রই আইনের আওতায় নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন এলাকাবাসী।
এব্যাপারে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন- তাহিরপুরে ৩টি শুল্ক ষ্টেশন থাকার পরও রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যারা চোরাচালান ও চাঁদাবাজি করছে তাদের
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক মাহবুবুর রহমান জানান, সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য বিজিবির পক্ষ থেকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।