১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৬ টায় প্রথমে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মৃতিসৌধের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
তাদের পর শ্রদ্ধা জানান জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এরপর একে একে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধা জানান।
এছাড়া তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল এ সময় সামরিক কায়দায় সালাম জানায়। শহীদদের স্মরণে বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর।
পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানাও এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাষ্ট্রপতি এবং বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে পরিদর্শন বইয়ে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করেন।
সাভারের আনুষ্ঠানিকতা সেরে সকাল ৮টার পর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরে দলীয় প্রধান হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার ভোরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে তোপধ্বনির মাধ্যমে শুরু হয় বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তির আনুষ্ঠানিকতা। একই সময়ে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শুরু হয় শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব।
শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, প্রধান বিচারপতি ও তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের শ্রদ্ধার ফুলে ভরে উঠতে থাকে শহীদ বেদী।
পাকিস্তানি শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটাতে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে স্বাধীনতার জন্য যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তা সফল পরিণতি পায় নয় মাস পর ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে।
সেদিন ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স (এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ময়দানে মুক্তিবাহিনী ও ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সেনা কমান্ডের যৌথ নেতৃত্বের কাছে আত্মসমর্পণ করেন যুদ্ধে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দেওয়া লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমীর আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী।
তাই ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবস; বিশ্বের হাতেগোনা যে ক’টি দেশের স্বাধীনতা দিবসের পাশাপাশি বিজয় দিবসের মতো উৎসবের উপলক্ষ রয়েছে, তার একটি বাংলাদেশ।
এবার বাঙালির মহাবিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে নেওয়া হয়েছে দুই দিনের অনুষ্ঠানমালা। তাতে যোগ দিতে বুধবারই ঢাকা পৌঁছেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ।
রাজধানীর সড়কগুলো সাজানো হয়েছে লাল-সবুজের মনোরম সাজে। সড়কদ্বীপগুলোতে শোখা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু আর প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত বিলবোর্ড। বিভিন্ন স্থাপনায় হয়েছে আলোকসজ্জা।
সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে হবে বিজয় দিবসের বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ, যাতে প্রথমবারের মত বন্ধু দেশ ভারত, ভুটান, রাশিয়া ও মেক্সিকোর সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদেরও দেখা যাবে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করবেন; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও উপস্থিত থাকবেন।
পরে গণভবনে বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরক ডাক টিকেট অবমুক্ত করবেন শেখ হাসিনা।