ইসলাম ধর্ম মতে, বান্দার সমস্ত পাপ কর্মকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয় বলেই এ মাসকে ‘রমজান’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
রমজান মাসের চাঁদ উদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সারা পৃথিবীজুড়ে নেমে এলো এক আধ্যাত্মিক স্পন্দন। রুহানিয়াতের দোলায় বিশ্বের সব মুসলমানের চিত্ত হলো আলোকিত।
রহমত, বরকত, নাজাতের পয়গান নিয়ে সূচিত হলো আত্মিক ও শারীরিক পরিশুদ্ধির মাস। খোশ আমদেদ মাহে রমজান।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) দয়াভরা আবেগ উচ্ছ্বাস নিয়ে রমজানকে স্বাগত জানাতেন। উৎসাহিত করেছেন উম্মতকেও। কারণ এ মাস আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাস।
এগারো মাস জাগতিক স্বপ্ন স্বাদে ডুবে থাকা বেপথের মানুষটিও রমজানে খুঁজে পাবে আল্লাহর একান্ত রহমত। খুঁজে পাবে অতীতে পাপ মোচনের হীরকসন্ধান।
মাহে রমজান এমন কল্যাণময় মাস, যার প্রথম দশদিন রহমত, দ্বিতীয় দশদিন বরকত ও শেষ দশদিন নাজাতের আলোয় দীপ্ত।
রমজানে আমলের বহুমাত্রিক সুযোগের পাশাপাশি রয়েছে অধিকতর নেকি হাসিলের নিশ্চয়তা। কারণ রমজানে প্রতিটি আমলের সাওয়াব বাড়িয়ে দেওয়া হয় আর রোজাদারের মুখের গন্ধ হয় মেশকে আম্বরের মতো সুগন্ধিময়।
পবিত্র ও বরকতময় এ রমজান মাসেই রয়েছে মহিমান্বিত লায়লাতুল কদর, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম, শ্রেষ্ঠ। রয়েছে ইতিকাফের মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালার ইবাদতে নিবিড়ভাবে বিলীন হওয়ার অবারিত সুযোগ।
পবিত্র কোরআন নাজিলের সম্মানিত মাসও রমজান। ফলে আল্লাহর নির্দেশ সম্বলিত আল কোরআনের সঙ্গে মুমিন মুসলমানের একাত্ম হওয়ার মাসও রমজান।
অতএব রমজান মাসের প্রতিটি মুহূর্ত মহামূল্যবান। দিন ও রাতের প্রতিটি ক্ষণ রোজা, নামাজ, তেলাওয়াত, জিকির, তাসবিহ, তাহলিলে পরিপূর্ণভাবে রমজানকে উদযাপন করাই প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর অবশ্য কর্তব্য।
ফরজ, ওয়াজিবের পাশাপাশি সুন্নতের অনুসরণ করে রমজানের প্রতিটি মুহূর্তকে সফল করা বিশ্বাসী মুসলমানের একান্ত দায়িত্ব।
হাদিস মতে, হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘রজব আল্লাহর মাস, শাবান আমার মাস আর রমজান আমার উম্মতের মাস।
এ হাদিসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, রজব মাস জমি চাষ করার, শাবান মাস বীজ বপন করার আর রমজান মাসে ফল লাভ করার অফুরন্ত নেয়ামত পাওয়া যায়।
এমতাবস্থায় প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর দায়িত্ব স্ব স্ব পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রমজানের যাবতীয় আমল নিজ দায়িত্বে সম্পন্ন করা।
রমজানে প্রত্যেকটি কাজের ভারসাম্য বজায় রেখে যার যার ক্ষেত্রে অনর্থক কথাবার্তা পরিহার করে চলতে পারলেই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন সম্ভব।
আর হাদিস অনুযায়ী, কারণ রমজানে নেক কাজের এত বিপুল প্রতিদান দেওয়া হয়, যা অন্য কোনো সময় মিলবে না। আর রমজানে গুনাহও অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে ক্ষতিকর।
তাই আমাদের উচিত এ মাসটির যথাযথ ব্যবহার করে যথাসম্ভব নেকি হাসিল করা।