সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জে পৃথক অভিযান চালিয়ে দুই নারী মাদক ব্যবসায়ীসহ ৯জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জব্দ করা হয়েছে অবৈধ ভাবে পাচাঁরকৃত চিনি, কয়লা ও গাঁজার চালানসহ ৫টি পিকআপ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- জেলার বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার রাজাপাড়া গ্রামের মুজিব পল্লীর বাসিন্দা আব্দুল আলীমের স্ত্রী মাদক ব্যবসায়ী কুলসুমা বেগম (৪০), একই উপজেলার আলীপুর গ্রামের
আলী আকবরের আসমা বেগম (৩০), একই গ্রামের মৃত সিদ্দিক মিয়ার ছেলে মঞ্জিল মিয়া (৪২), পাশের সাত্তারকোনা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে আল-আমিন (২০), মাজাইর গ্রামের
আব্দুল আলীর ছেলে সুজন মিয়া (২২), পদ্মনগর গ্রামের রবীন্দ্র দেবনাথের ছেলে প্রান্ত দেবনাথ (৩৪), জগন্নাথপুর উপজেলার নলিয়াপুর গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে আব্দুল জলিল (২০) ও
হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার শনখলা গ্রামের ছবর উল্লাহর ছেলে হাবিবুর রহমান হাবিব (২৯),চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার রাজারগাঁও গ্রামের আব্দুল মতিন পাটোয়ারীর ছেলে নাজমুল (২৮)।
আজ বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্ভর) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃতদের পৃথক ভাবে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে-
গতকাল বুধবার (৬ ডিসেম্ভর) সকাল সাড়ে ১০টায় জেলার বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার নতুনপাড়া গ্রামের অভিযান চালিয়ে ২ কেজি গাঁজাসহ নারী মাদক ব্যবসায়ী কুলসমা বেগম, আসমা বেগম
ও তাদের অটোরিক্সা চালক আব্দুল জলিলকে হাতেহাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। অপরদিকে ভোর রাতে পাশের তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির সামনে দিয়ে বালিয়াঘাট
সীমান্তের লালঘাট ও লাকমা এলাকা দিয়ে একাধিক মামলার আসামী ইয়াবা কালাম মিয়া, রতন মহলদার, কামরুল মিয়া, জিয়াউর রহমান জিয়া, মনির মিয়া, আক্কল আলী, কামাল মিয়া ও
গডফাদার তোতলা আজাদগং ভারত থেকে অবৈধ ভাবে প্রায় ৩শ মেঃটন চোরাই কয়লা ও বিপুল পরিমান মাদকদ্রব্য পাচাঁর করে অর্ধশতাধিক ট্রলি ও লড়ি গাড়ি বোঝাই করে বড়ছড়া
শুল্কষ্টেশনে নিয়ে গেলেও এব্যাপারে পুলিশ কোন পদক্ষেপ নেয়নি। তবে বিজিবির গোয়েন্দা সংস্থা ডিএসবি সদস্যদের সহযোগীতায় এক লড়ি অবৈধ কয়লা আটক করে বিজিবি। কিন্তু টেকেরঘাট ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার আনোয়ার হোসেন অবৈধ কয়লা রেখে লড়ি গাড়ি ছেড়ে দেন স্থানীয়রা জানান।
এদিকে বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার মাছিমপুর, চিনাকান্দি ও তাহিরপুর উপজেলার লাউড়গড় ও চানপুর সীমান্ত পথে ভারত থেকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ১০লাখ টাকা মূল্যের ১৬০বস্তা অবৈধ চিনি পাচাঁর করে ৪টি পিকআপ বোঝাই করে পাশের দিরাই উপজেলা সদরের বাজারে নিয়ে যাওয়ার
পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে চোরাকারবারী আল-আমিন, সুজন মিয়া, মঞ্জিল মিয়া ও প্রান্ত দেবনাথকে গ্রেফতার করে। অপরদিকে দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলা সীমান্ত দিয়ে পাচাঁরকৃত অবৈধ চিনি পাচাঁর করে ঢাকা যাওয়ার সময় জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ
নামকস্থানের সড়কে অভিযান চালিয়ে এক ট্রাক বোঝাই আরো ১৬০বস্তা অবৈধ চিনিসহ চোরাকারবারী হাবিবুর রহমান হাবিব ও নাজমুলকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু গডফাদার হাবিব সারোয়ার তোতলা আজাদকে গ্রেফতার না করার কারণে সীমান্ত চোরাচালান
দিনদিন বেড়েই চলেছে। তবে তাহিরপুর উপজেলার কামড়াবন্দ গ্রামে গডফাদার তোতলা আজাদের অন্দর মহল ও সীমান্ত এলাকায় সোর্সদের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করলে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অর্জিত কোটিকোটি টাকার অবৈধ মালামাল ও সম্পদ উদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে সীমান্তবাসী জানান।
বিশ^ম্ভ¢রপুর থানার ওসি শ্যামল বণিক, দিরাই থানার এসআই তপন চন্দ্র দাশ ও জগন্নাথপুর থানার এসআই জিয়া উদ্দিন ৫টি পিকআপ ও ট্রাকসহ অবৈধ চিনি, গাঁজাসহ ৯জন গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান- গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে থানায় পৃৃথক পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।