সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের চারাগাঁও সীমান্তে সোর্স পরিচয়ধারী একাধিক মামলার আসামীরা সরকারের লাখলাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে রাতে কয়লা এবং দিনের আলোতে প্রকাশে বালি-পাথর পাচাঁর করছে।
শুধু তাই নয়, সোর্সরা পাচাঁরকৃত অবৈধ মালামাল থেকে বিজিবি, পুলিশ ও সাংবাদিকদের নাম ভাংগিয়ে করছে চাঁদাবাজি। তারা দীর্ঘদিন চোরাচালান ও চাঁদাবাজি করে হয়েগেছে কোটিপতি। তারপরও সোর্সদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়না আইনগত কোন পদক্ষেপ। উদ্ধার করা হয়না তাদের অর্জিত অবৈধ অর্থ-সম্পদ।
তাই এব্যাপারে প্রশাসনের উপরস্থ কর্মকর্তাদের সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- প্রতিদিনে মতো আজ বুধবার (৩রা জুলাই) সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত জেলার তাহিরপুর উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের কলাগাঁও নদী থেকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে অর্ধশতাধিক স্টিলবডি ইঞ্জিনের নৌকা
দিয়ে বালি বোঝাই করে কিশোরগঞ্জ জেলা ভৈরব ও নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা নিয়ে যায় থানার সোর্স পরিচয়ধারী রফ মিয়া ও বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী আইনাল মিয়া, সাইফুল মিয়া, রিপন মিয়া ও লেংড়া জামাল। শুধু তাই নয়- সীমান্ত চোরাকারবারীদের গডফাদার তোতলা আজাদের নেতৃত্বে ওই সোর্সরা ভোর ৫টায়
বীরেন্দ্রনগর সীমান্তের সুন্দরবন, লামাকাটা ও চারাগাঁও সীমান্তে জঙ্গলবাড়ি, মাইজহাটি এলাকা দিয়ে ৭টি স্টিলবডি ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে প্রায় ২৭০ মেঃটন কয়লা, পেয়াজ ও চিনিসহ মাদকদ্রব্য পাচাঁর করে ওই দুই স্থানে নিয়ে যায় সোর্সরা। এরআগে গতকাল মঙ্গলবার (২রা জুলাই) রাত ১টায় গডফাদার তোতলা আজাদের
নেতৃত্বে ওই সীমান্তের বাঁশতলা ও লালঘাট এলাকা দিয়ে ৬টি স্টিলবডি ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে প্রায় ২শ মেঃটন কয়লা ও বিপুল পরিমান মদ,গাঁজা ও ইয়াবা পাচাঁর করে নিয়ে যায় সোর্স পরিচয়ধারী চোরাকারবারী রুবেল মিয়া, আমির আলী, হারুন মিয়া, বাবুল মিয়া, সোহেল মিয়া, আনোয়ার হোসেন বাবলু ও রফ মিয়া।
কিন্তু অবৈধ মালামালসহ সোর্সদের গ্রেফতারের জন্য বিজিবি ও পুলিশের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেওয়া খবর পাওয়া যায়নি। চারাগাঁও শুল্কস্টেশনের বৈধ ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে- বিজিবি ক্যাম্পের সামনে ও আশেপাশে অবস্থিত একাধিক ডিপুসহ সীমান্তের প্রতিটি বসতবাড়ির ভিতরের হাজার হাজার মেঃটন অবৈধ
কয়লা ও মাদকদ্রব্য মজুত করে রাখা হয়। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পাচাঁরকৃত অবৈধ কয়লা কম দামে প্রকাশে বিক্রি হওয়ার কারণে শুল্কস্টেশনের কয়েক হাজার ব্যবসায়ী সরকারকে লাখলাখ টাকা রাজস্ব দিয়ে ভারত থেকে এলসির মাধ্যমে আমদানী করা বৈধ কয়লা ও চুনাপাথর বিক্রি করতে গিয়ে বিরাট সমস্যায় পড়তে হয়। সোর্সরা প্রতিটন চোরাই কয়লা থেকে বিজিবির নামে ৮শত টাকা, থানার নামে ১হাজার টাকাসহ মোট ২৩শ টাকা চাঁদা নেয়।
এছাড়া বালির নৌকা থেকে ৭শ টাকা, ১ বস্তা পেয়াজ থেকে ২শ টাকা, ১বস্তা চিনি থেকে ৩শ টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করে। কিন্তু চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য আজ পর্যন্ত নেওয়া হয়নি কার্যকর কোন আইনগত পদক্ষেপ। যার ফলে গডফাদার তোতলা আজাদ ও সোর্সরা এখন কোটিপতি। এব্যাপারে চারাগাঁও বিজিবি
ক্যাম্পের ভিআইপির দায়িত্বে থাকা সৈনিক শামীম বলেন- আমার উপরস্থ কর্মকর্তাদের নির্দেশ মতো আমি দায়িত্ব পালন করছি। তারা যে ভাবে নির্দেশ দেয় আমি সেই ভাবে কাজ করি। আপনি ক্যাম্প কমান্ডারের
সাথে যোগাযোগ করুন। ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার শফিকুল বলেন- আমার জানা মতে সীমান্ত এলাকা
দিয়ে চোরাচালান হয়না। আপনি তথ্য দিয়েন আমি ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব। তাহিরপুর থানার ওসি কাজী নাজিম উদ্দিন বলেন- থানা পুলিশের কোন সোর্স নাই। সীমান্ত চোরাচালান বন্ধের দায়িত্ব বিজিবির
আমাদের না। এব্যাপারে বিজিবির সাথে কথা বলুন।