আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা। বছরের পর পর বছর ঢাকার ক্লাব দুটি মাঠে নামলেই ক্রীড়াঙ্গনে শুরু হয় উন্মাদনা। মাঠ ও মাঠের বাইরে থাকে নানা আলোচনা।
শুক্রবার (১১ জুন) ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) মুখোমুখি হয়েছিল দল দুটি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের লড়াই চলাকালে দফায় দফায় রাগান্বীত হয়ে আলোচনায় সাকিব আল হাসান।
ম্যাচ চলাকালীন আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মনঃপুত না হওয়ায় প্রথমে লাথি মেরে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন সাকিব। এর পরের ওভারে তিনটি স্ট্যাম্পই তুলে সজোরে মাটিতে আছড়ে ফেলেন তিনি।
যা নিয়ে বিকেল থেকেই চলছে আলোচনা-সমালোচনা। তবে ম্যাচটি বৃষ্টি আইনে ৩১ রানের ব্যবধানে জিতেছে সাকিবের মোহামেডান। খেলা শেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের এমন কাজকে মানবিক ভুল হিসেবে উল্লেখ করে ক্ষমা চেয়েছেন সাকিব।
এ ঘটনায় নিজের ভাবনা নিয়ে শুক্রবার মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সাকিবের স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশির। তার মতে এটি ছিল সাকিবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ।
(শিশিরের ফেসবুক পোস্ট নিচে তুলে ধরা হলোঃ)
গণমাধ্যমের মতো আমিও পুরো বিষয়টা খুব উপভোগ করছি। অবশেষে টিভিতে কিছু খবর পাওয়া গেলো। যারা আজকের (শুক্রবার) ঘটনার পরিষ্কার চিত্র বুঝতে পেরেছে, তাদের সমর্থন দিতে দেখা সত্যিই দারুণ। অন্তত কেউ একজনের তো সব প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহসটা রয়েছে।
যাই হোক, এখানে মূল বিষয়টা চাপা পড়ে যাচ্ছে কারণ গণমাধ্যমে তার (সাকিব) দেখানো রাগের বিষয়টিই শুধু সামনে আসছে। পুরো ঘটনায় মূল বিষয়টা হলো আম্পায়ারদের নেয়া ক্রমাগত ভুল সিদ্ধান্তগুলো। কিন্তু শিরোনামগুলো সত্যিই হতাশাজনক।
আমার কাছে মনে হয়, এটা তার বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র। যা কি না দীর্ঘসময় ধরে চলে আসছে, যাতে যেকোনো পরিস্থিতিতে তাকে খলনায়ক বানানো যায়। আপনি যদি ক্রিকেটপ্রেমী হয়ে থাকেন, তাহলে নিজের কর্মকান্ডের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।
খেলার মাঠে যা হয়েছিল প্রথম ঘটনা
ম্যাচের পঞ্চম ওভারের বল করছিলেন মোহামেডান অধিনায়ক সাকিব। শেষ বলে স্ট্রাইকে ছিলেন আবাহনীর দলপতি মুশফিকুর রহিম। সাকিব এলবিডব্লিউর আবেদন করলেও আম্পায়ার ইমরান পারভেজ আউট দেননি। মুহূর্তেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় সাকিবকে। স্ট্যাম্পে লাথি দিয়ে আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন তিনি।
ঘটনা দুই
ষষ্ঠ ওভারের পঞ্চম বল পর্যন্ত আবাহনীর সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ৩১ রান। আকাশ ছিল মেঘলা। খেলা থামিয়ে মাঠকর্মীদের পিচ ঢাকার জন্য নির্দেশ দেন আম্পায়ার। ঠিক ওমন সময় সাকিব আবারও চড়াও হন। দৌড়ে এসে স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলেন তিনি। তার পর রাগ দেখিয়ে মাঠ থেকে বের হয়ে আসেন।
তৃতীয় ঘটনা
বৃষ্টি শুরুর হচ্ছিল। সাকিবরা মাঠ থেকে বের হওয়ার সময় আবাহনীর কোচ ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন সাকিবের দিকে তেড়ে আসতে থাকেন। সাকিবও দূর থেকে তার সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। সাকিবের পাশে থাকা টিম ম্যানেজমেন্টের লোক তাকে ধরে রাখেন। অন্যদিকে সুজনকে মোহামেডানের খেলোয়াড় শামসুর রহমান শুভ ধরে থাকেন।
সুজন ও সাকিবের বিষয়টির অবশ্য মীমাংসা হয়েছে বলে জানান আবাহনীর ম্যানেজার মাসুদ ইকবাল মামুন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর সাকিব এসেছিলেন আমাদের ড্রেসিংরুমে। এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। সেখানে খালেদ মাহমুদ সুজনও ছিলেন। বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে। পরে দুজন বুক মিলিয়েছেন।’