সুনামগঞ্জে যৌতুকের জন্য ৪ মাসের অন্তঃসত্বা এক গৃহবধুর হাত-পা ও মুখ বেঁধে নদীতে ফেলে হত্যার চেষ্টা করার ঘটনায় ৫জনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ রবিবার ( ১ আগষ্ট) সকালে মামলাটি দায়ের করেন নির্যাতিত গৃহবধু মাইফুল বেগম (২৩)। দায়েরকৃত মামলার আসামীরা হলেন- স্বামী আবু তাহের (২৮), শ^শুর সাজিদ মিয়া (৬০), দেবর জাকির হোসেন (২২), বাবুল মিয়া (২৫) ও মামা আলী হোসেন (৪০)।
মামলা সূত্রে জানা জানা গেছে- প্রায় ৮মাস আগে জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার চৌধুরীপাড়া গ্রামের সাজিদুল ইসলামের ছেলে আবু তাহের (২৮) এর সাথে তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদলারপাড় গ্রামের কারী নিজাম উদ্দিনের মেয়ে মাইফুল বেগম (২৩) এর পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়।
কিন্তু বিয়ের পর স্বামী আবু তাহের তার নিজ বাড়ি রেখে স্ত্রী মাইফুল বেগমকে নিয়ে তার বাবার বাড়ি তাহিরপুর উপজেলার বাদলারপাড় গ্রাম সংলগ্ন ভোলাখালি গ্রামে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন।
এবং বিয়ের ২মাস যেতে না যেতেই যৌতুকের জন্য স্ত্রী মাইফুল বেগমকে স্বামী আবু তাহের নির্যাতিন শুরু করে। তার নির্যাতন সইতে না পেরে অসহায় গৃহবধু মাইফুল বেগম তার দরিদ্র বাবার কাছ থেকে একবার ৫০হাজার টাকা এনে দেন। তারপরও ক্ষান্ত হয়নি সেই লোভী পাষন্ড স্বামী আবু তাহের।
তার চাহিদা দিনদিন বাড়তে থাকে। অবশেষে কোন উপায় না পেয়ে ৪ মাসের অন্তঃসত্বা গৃহবধু মাইফুল বেগম তার বাবার বাড়িতে চলে আসে।
এমতাবস্থায় গত শুক্রবার (৩০ জুলাই) রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গৃহবধু মাইফুল বেগম ঘরের বাড়িরে যাওয়ার পর পূর্ব থেকে উৎ পেতে থাকা যৌতুক লোভী পাষন্ড স্বামী আবু তাহের তার ভাই জাকির হোসেন (২৫) ও বাবুল হোসেন (২২) মিলে তাকে তুলে নিয়ে যায়।
পরে ওই গৃহবধুর হাত-পা ও মুখ বেঁধে পাশর্^বর্তী ভাংগারখাল নদীতে নিয়ে ফেলে দেয়। এসময় স্থানীয় লোকজন বিষয়টি দেখতে পেয়ে থানায় জানালে পুলিশ এসে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় নদী থেকে গৃহবধু মাইফুল বেগমকে উদ্ধার করে আশংকাজনক অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে।
এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তাহিরপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ তরফদার সাংবাদিকদের বলেন- অন্তঃসত্বা গৃহবধুর দায়ের করা মামলার আসামীরা পলাতক থাকায় কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে আসামীদেরকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।