সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার লাউড়গড় সীমান্তে বিজিবি পৃথক অভিযান চালিয়ে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে সোর্সদের পাচাঁরকৃত ২০ ঘনফুট পাথরসহ ৩টি ঠেলাগাড়ি ও ১টি বারকি নৌকা আটক করেছে। অন্যদিকে বালিয়াঘাট ও
চারাগাঁও সীমান্তের লালঘাট এলাকা থেকে ৭শ কেজি কয়লা জব্দ দেখিয়ে সোর্সদের নিয়ে ৫টি ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে প্রায় ৭৫ মেঃটন কয়লা পাচাঁর করে একদিল মিয়ার মাধ্যমে নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা উপজেলা সদরের
মনতলা নদীর তীরে অবস্থিত কয়লা ব্যবসায়ী আজিজ মিয়া ও সাজু মিয়ার ডিপুতে নিয়ে মজুত করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- আজ মঙ্গলবার (২৪ আগষ্ট) ভোরে জেলার তাহিরপুর উপজেলার বালিয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে সোর্স ইয়াবা কালাম ও মানিক মিয়ার নেতৃত্বে ভারত থেকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ৩টি চোরাই গুহা ও ২টি চোরাই পথ
দিয়ে প্রায় ৫০ মেঃটন কয়লা পাচাঁরের পর ২টি ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে ৩০ মেঃটন কয়লা নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা উপজেলা সদরের মনতলা নদীর তীরে অবস্থিত কয়লা ব্যবসায়ী আজিজ মিয়া ও সাজু মিয়ার ডিপুতে নিয়ে
মজুত করা হয়। আর বাকি কয়লা লালঘাট, লাকমা ও টেকেরঘাট এলাকার বিভিন্ন বাড়িঘর, পুকুর ও হাওরের পানিতে লুকিয়ে রাখা হয়েছে।
অপরদিকে রাত অনুমান ১টায় চারাগাঁও সীমান্ত দিয়ে সোর্স রমজান মিয়া, শফিকুল ইসলাম ভৈরব, শহিদুল্লাহ, কুদ্দুস মিয়া, জসিম মিয়া, বাবুল মিয়া ও খোকন মিয়ার নেতৃত্বে প্রায় ৮০ মেঃটন কয়লা ভারত থেকে পাচাঁর করে ৩টি ইঞ্জিনের
নৌকায় ৪৫ মেঃটন কয়লা বোঝাই করে ওই দুই ডিপুতে নিয়ে মজুত করা হয়। আর উপরস্থ কর্মকর্তার চাপ সামলানোর জন্য সোর্সদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে পাচাঁরকৃত কয়লার মধ্যে ৭শ কেজি কয়লা জব্দ দেখায় চারাগাঁও ক্যাম্পের
হাবিলদার দিলোয়ার ও এফএস রিপন। এজন্য পাচাঁরকৃত ১ নৌকা কয়লা থেকে চারাগাঁও ক্যাম্পের নামে ১১হাজার টাকা, বালিয়াঘাট ক্যাম্পের নামে ১ বস্তা কয়লা থেকে ১০০টাকা চাঁদা নিয়েছে সোর্স ইয়াবা কালাম, রমজান মিয়া ও শফিকুল ইসলাম ভৈরব।
অন্যদিকে লাউড়গড় সীমান্তের যাদুকাটা নদী, সাহিদাবাদ, পুরান লাউড় ও বারেকটিলা এলাকা দিয়ে সোর্সরা ভারত থেকে মদ, বিড়ি, গাঁজা, ইয়ারা, কয়লা ও পাথর পাচাঁরের পর খবর পেয়ে বিজিবি পৃথক অভিযান চালিয়ে সাহিদাবাদ
এলাকা থেকে ১৫ ঘনফুট ভারতীয় পাথরসহ ৩টি ঠেলাগাড়ি ও যাদুকাটা নদী থেকে ৫ ঘনফুট পাথরসহ ১টি বারকি নৌকা পরিত্যক্ত অবস্থায় আটক করেছে।
তাহিরপুর সীমান্তের ৬টি বিজিবি ক্যাম্পের মধ্যে লাউড়গড় ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা বিজিবি সদস্যরা ভারত থেকে অবৈধ ভাবে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পাচাঁরকৃত মালামাল জব্দ করার জন্য সক্রিয় ভাবে দায়িত্ব পালন করেছে। কিন্তু সীমান্ত
চোরাচালন ও চাঁদাবাজির মূল নায়ক সোর্সদেরকে গ্রেফতার করছেনা। তবে র্যাব ও পুলিশ সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারীসহ অনেক মাদক ব্যবসায়ীকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে।
তাই সীমান্ত চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বন্ধ করার জন্য সোর্সদের গ্রেফতার করতে র্যাব ও পুলিশ প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে দাবী করেছেন সীমান্ত এলাকার সচেতন জনসাধারণ।
এব্যাপারে সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক তসলিম এহসান সাংবাদিকদের বলেন- পৃথক অভিযান চালিয়ে জব্দকৃত অবৈধ মালামাল শুল্ক কার্যালয়ে জমা দেওয়া কার্যক্রম চলছে। সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।