কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলাধীন পান্ডুল ইউনিয়নের তেলী পাড়া গ্রামের বাসিন্দা ক্লোজআপ ওয়ান তারকা ও কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শিল্পী সাজু আহমেদ এর আঘাতে
গর্ভধারিনী মা রাণীজন বেওয়া গুরুতর আহত হয়ে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা যায়, ক্লোজআপ ওয়ান তারকা সাজু আহমেদ শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য তার পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা নেন।
তার মা রাণীজন বেওয়া সন্তানকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে জমি বন্দক রেখে পরিবারের টাকা সাজুর হাতে তুলে দেন।
সন্তান প্রতিষ্ঠিত হলে তাদের সকল বন্দক জমি উদ্ধার হবে এবং পরিবারের স্বচ্ছলতা ও শান্তি ফিরে আসবে এই আশায়।
কিন্তু ক্লোজআপ ওয়ান তারকা খ্যাত কণ্ঠশিল্পি সাজু আহমেদ সমাজে প্রতিষ্ঠিত হলেও তার পারিবারিক বন্দক রাখা জমিগুলো আর উদ্ধার হয়নি।
বিভিন্ন ভাবে টাকা যোগাড় করে সাজুর মা রাণীজন বেওয়া বন্দকী জমির কিছু অংশ উদ্ধার করে বর্তমানে উক্ত জমিতে চাষাবাদ করে সংসার চালাচ্ছেন।
সম্প্রতি সময়ে সাজু তার পৈত্রিক সম্পত্তির হিস্যা বুঝে চাইলে পরিবারের লোকজন ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে গত ১৬ আগস্ট শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
শালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতে এক বছরের জন্য সকল জমি তার মাতা রাণীজন বেওয়ার নিয়ন্ত্রণে চাষাবাদ করার মৌখিক সিদ্ধান্ত দেয়া হয়।
কিন্তু সম্প্রতি সময়ে পান্ডুল ইউনিয়ন পরিষদের আসন্ন নির্বাচনে সাজু আহমেদ নিজেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।
নির্বাচনের জন্য পৈত্রিক জমি বিক্রি করতে চাইলে মা তাতে অস্বীকৃতি জানান। এতে মা-ছেলের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়।
এরই জেরে গত ৩ আগস্ট শুক্রবার দুপুরে পরিবারের লোকজনের সাথে সাজুর সামান্য কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে সাজু কাঠের পিড়া(বসার জন্য কাঠের তৈরি) দিয়ে ঢিল ছুড়ে তার মায়ের কপালে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করেন।
এলাকার লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় সাজুর মাকে (রানীজন বেওয়া) উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
পান্ডুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাকে (সাজুর মা) দেখতে এসে বলেন, সাজু দেশের একজন খ্যাতিমান কন্ঠশিল্পী এবং কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের একজন সদস্য।
তার আঘাতে আপন মায়ের রক্ত ঝরা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। আমি এহেন ঘটনার ধিক্কার জানাই। সাজু এলাকায় নিজেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছে।
যার কাছে গর্ভধারিনী মা ই নিরাপদ নয় তার কাছ থেকে জনগণ কি সেবা পাবে? সাজু স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগের সুনাম নষ্ট করেছে, ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন করেছে।
তিনি সাজুকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্যপদ থেকে বহিস্কার দাবী করেন। উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমতিয়াজ কবীর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।