মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া:সুনামগঞ্জে জলমহাল নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১জনের মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামী আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়কে গ্রেফতার করেছে র্যাব। আজ শনিবার (৩০ অক্টোবর)
দুপুরে ওই আওয়ামীলীগ নেতাকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট খালেদ মিয়ার আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাইলে ২দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক।
সুনামগঞ্জ কোর্ট ইন্সপেক্টর অসীম চন্দ্র দেব সাংবাদিকদের জানান- গতকাল শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) মধ্যরাতে সিলেট শহরের মদিনা মার্কেট এলাকা থেকে দিরাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়কে র্যাব গ্রেফতার
করে আজ শনিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে দিরাই থানায় হস্তান্তর করার পর পুলিশ দুপুরে আদালতে হাজির করে ৫দিনের রিমান্ড চায়। পরে ২দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- জেলার দিরাই উপজেলা ভাটিপাড়া ইউনিয়নে অবস্থিত উদির হাওর জলমহালটি স্থানীয় একটি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির নামে লিজ নিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ
সম্পাদক প্রদীপ রায়। আর ওই জলমহাল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামীলীগ নেতা কাজল নুরের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। তাদের এই বিরোধ দীর্ঘদিন যাবত চলছিল।
তারই জের ধরে গত ১৮ অক্টোবর দুপুরে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই সংঘর্ষে প্রবাসী আওয়ামীলীগ নেতা কাজল নুরের চাচাতো ভাই রুহেব মিয়া (৪০) এর মৃত্যু হয় এবং উভয় পক্ষের আরো ৩৫জন আহত হয়।
এঘটনার ৫দিন পর নিহতের ভাই সুহেব মিয়া বাদী হয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়কে প্রধান আসামী করে মোট ৭৩জনের বিরোদ্দে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এই মামলায় পুলিশ ১জনকে গ্রেফতার করেছে। আর ৩২জন আসামী সেচ্ছায় আদালতে আত্মসমর্পন করেছে।
এরআগে ২০১৭ সালের ১৭ই জানুয়ারী দিরাই উপজেলার জারলিয়া জলমহাল দখল নিয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগের
দুইগ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলাগুলিতে ৩জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়, দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশারফ মিয়া, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদারসহ
৩৯জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়। সেই মামলায় আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায় জামিনে ছিলেন।
এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দিরাই থানার ওসি আজিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন- গ্রেফতারকৃত আওয়ামীলীগ নেতা প্রদীপ রায়কে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে আনা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।