বশির আলম, শারীরিক প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থা গাজীপুর এর উদ্যোগে প্রতিবন্ধীদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন সচেতনতা মূলক আইনি পরামর্শ সুরক্ষা আইন সংক্রান্ত বিষয় আলোচনা অনুষ্ঠান সভা গত শনিবার টঙ্গী ৪৬নং ওয়ার্ড
কাউন্সিলর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা সভায় শারীরিক প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি বশির আল হোসাইনের সভাপতিত্ত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন গাজীপুর
সিটি কর্পোরেশনের ৪৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম নুরু, টঙ্গী শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা নেছার উদ্দিন, গ্লামকো ফাউন্ডেশনের চিকিৎসা বিষয়ক ম্যানেজার জামিল হোসাইন, টঙ্গী রেল স্টেশন জামে মসজিদ পরিচালনা
কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাজী নজরুল ইসলাম, সমাজসেবক শহিদুল ইসলাম, কামাল হোসেন, আনুমুজ্জামান অনু, আইন বিষয়ক পরামর্শ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান সরকার, শিক্ষক প্রতিনিধি সুলতানা কাউছার, সমাজসেবিকা শাহানা
পারভীন, নোঁওগাও ওয়েল ফেয়ার সোসাইটির শেখ সাবিনা ইয়াসমিন, গার্মেন্টস ওয়েল ফেয়ার অফিসার কাজী আল মামুন পলাশ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাসুদ খান, সমাজকর্মী সেলিম খান, শাহানাজ খানম, নাসরীন আক্তার প্রমুখ।
এসময় শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষা আইন বিষয়ক শীর্ষক আলোচনা গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপন করেন সুরক্ষা আইন।
বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ (পরবর্তীতে ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন’ হিসেবে উল্লিখিত) জাতীয় সংসদে পাস করে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনের প্রস্তাবনায় সিআরপিডির বাধ্যবাধকতার কথা স্পষ্টভাবে স্বীকার করা হয়েছে।
এ আইনে সিআরপিডিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির যে অধিকারগুলো স্বীকার করা হয়েছে, সেগুলোকেই অধিকার হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই অধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনে বিভিন্ন প্রতিকারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ আইনটি সকল স্তরের মানুষের নিকট পৌঁছায়নি।
যেমন : শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের পাঠ্যক্রমে এই আইনের বিষয়ে কোনো তথ্য অন্তর্ভুক্ত হয়নি। ডিপিওসমূহের প্রয়োজনকে সামনে রেখে এই হ্যান্ডবুক প্রণয়নের কাজ হাতে দেয়া হয়েছে।
এই হ্যান্ডবুকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনের আলোকে প্রতিবন্ধিতার সংজ্ঞা, প্রতিবন্ধিতার ধরন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকারসহ এই আইন প্রয়োগের বিভিন্ন ব্যবহারিক দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
বাংলাদেশে প্রচলিত বিভিন্ন আইন, দেশি ও বিদেশি আদালতের সিদ্ধান্ত ও কেস স্টাডির মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনে বর্ণিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকারসমূহকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
অধিকার থেকে বি ত হলে বা বৈষম্যের শিকার হলে কিভাবে ক্ষতিপূরণের জন্য জেলা কমিটিতে আবেদন করতে হবে, তা বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনের আলোকে কতিপয় অপরাধ ও বিচার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
ডিপিওসমূহ কীভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সহায়তা করতে পারবে, এরূপ সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে সেবাপ্রার্থীদের আবেদন বা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কিভাবে গ্রহণ ও সংরক্ষণ করবে তাও বর্ণনা করা হয়েছে।
মাঠ প্রশাসনের সাথে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ১৮ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ অধিকার ও সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নে কীভাবে কাজ করতে হবে, তা এই হ্যান্ডবুকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। দেশি ও বিদেশি ডিপিওসমূহের কিছুসফল অ্যাডভোকেসির গল্পও সংযোজিত হয়েছে।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনের মধ্যে প্রক্রিয়াগত যেসব ত্রুটি, অস্পষ্টতা ও দুর্বলতা রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে তার জন্য বিকল্প পদ্ধতি কী হতে পারে সেগুলোও আলোচনা করা হয়েছে।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো, এই আইনটি বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষাবিষয়ক কমিটি গঠনের বিধান। কমিটিসমূহকে কার্যকর করার ক্ষেত্রে ডিপিওসমূহের করণীয় সম্পর্কে এই হ্যান্ডবুকে আলোচনা করা হয়েছে।
এই হ্যান্ডবুক প্রণয়নের মূল উদ্দেশ্য হলো, ডিপিও নেতৃবৃন্দকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন সম্পর্কে সহজ ভাষায় সুস্পষ্ট ধারণা দেয়া এবং আইনটি কার্যকর করার ক্ষেত্রে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা।
এই হ্যান্ডবুকটি পাঠ করলে ডিপিও নেতৃবৃন্দ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনের মাধ্যমে অধিকার আদায়ে যথাযথ সহায়তা প্রদান করতে সক্ষম হবেন। তারা মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনের সাথে আইন বাস্তবায়নের
লক্ষ্যে অ্যাডভোকেসি করতে পারবেন। ডিপিওসমূহের জন্য প্রণীত এই হ্যান্ডবুকটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার আদায় ও সুরক্ষায় যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আমরা আশা করি।