টঙ্গীতে হালিম গাজী (৪৫) নামের এক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশ। নিহতের স্ত্রী লায়লা বেগম জানান, আমার স্বামী দীর্ঘদিন যাবত টঙ্গী গাজীপুরা কাজী বাড়ি এলাকায় গার্মেন্টসের বর্জিত মালের ব্যবসা করে আসছে।
স্থানীয় বিপ্লবের কাছ থেকে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে গোডাউন মাল ক্রয়-বিক্রয় করতো। বিগত ২ এপ্রিল আমার স্বামীর বোন জামাই আব্দুল জলিল মারা যায়। তারা একই এলাকায় সফিকুল ইসলাম এর বাড়ির ৫ম তলায় ভাড়া থাকতো। বোন জামাইয়ের মৃত্যুতে আমার স্বামী ওই বাসায় থাকতেন।
গত ৭ এপ্রিল সেই বাসা থেকে সকাল ৮টার সময় আমাদের ভাড়াটিয়া বাসায় আসার উদ্দেশ্যে বের হয়। এরপর থেকে বাসায় আসে না। কিছু সময় পরে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে বন্ধ পাওয়া যায়। অনেক খোজাখুজি করে না পেয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানায় একটি নিখোঁজ সাধারণ ডায়েরী করি। গতকাল শনিবার সকালে খবর পাই যে, আমার স্বামীর বোনের ভাড়াটিয়া বাড়ির লিফটের নিচ থেকে তার মৃত দেহ উদ্ধার করেছে।
খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে স্বামীর লাশ সনাক্ত করি। আমার স্বামীর সাথে কারো কোন শত্রুতা নেই।
ব্যবসায়ীক লেনদেন হিসেবে একই এলাকার ব্যবসায়ী সেলিমের কাছে ইতিপূর্বে ১১লক্ষ টাকা পাওনা ছিল। সেখান থেকে সেলিম আমাদের কিছু টাকা পরিশোধ করিয়াছে। বাকি টাকা দেই দিচ্ছি বলে বিভিন্ন তালবাহানা করিয়া আসিতেছে। আমার স্বামীকে হত্যা করে লাশ লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে বলে মনে করি। যে বা যারা আমার স্বামীর হত্যাকান্ডে জড়িত আছে তদন্ত করে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত বিচারের দাবী জানাচ্ছি। এমনি করে কান্নায় বাকরুদ্দ হয়ে পড়েন নিহতের স্ত্রী লায়লা বেগম। নিহত হালিম গাজী গাজীপুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তোতা মিয়ার বাড়ির তৃতীয় তলার ভাড়াটিয়া। তার গ্রামের বাড়ি বগুড়া জেলার সিবগঞ্জ থানার চাপাচিল গ্রামে মৃত মিছির আলী ছেলে। নিহতের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
এ ঘটনায় বাড়ির মালিক সফিকুল ইসলাম জানান, আমার বাড়ির ৫ম তলার ভাড়াটিয়া আব্দুল জলিল অসুস্থ অবস্থায় ২ এপ্রিল মারা যায়। ঠিক তার পরের দিন ৩ এপ্রিল বাড়ির দারোয়ান তাহের হৃদযন্তেরক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায়। ৫ম তলার ভাড়াটিয়া আব্দুল জলিলের মৃত্যুতে তার আত্মীয় এই বাসায় থাকতো। গত ৭ এপ্রিল তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে থানায় একটি নিখোঁজ সাধারণ ডায়েরী করেছে বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম। গত ৯ এপ্রিল রাতে বাড়ির দারোয়ান লিটন আমাকে জানায় লিফটের ভিতর থেকে দূর্গন্ধ বের হচ্ছে। ১০ এপ্রিল সকাল ১০টার সময় এসে জানায় লিফটের ভিতর একটি মরদেহ পড়ে আছে। এ ঘটনায় আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কাজী আবুবকরকে অবগত করলে ঘটনাস্থলে থানা পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি মো: শাহ আলম জানান, থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। বিভিন্ন ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এটি হত্যা না আত্মহত্যা তদন্ত করা হবে।