কুড়িগ্রাম জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে একজন নিহত হয়েছে। শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও বহুগাছপালা ভেঙে গেছে। উঠতি বোরো, ভুট্রা ও বেগুনক্ষেতসহ প্রায় শতাধিক হেক্টর ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। শুক্রবার রাত ১১টার পর এই কালবৈশাখী আঘাত হানে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, কালবৈশাখী ঝড়ে গাছের নীচে চাপা পড়ে উলিপুরের হাতিয়া কুমারপাড়া গ্রামের মমির উদ্দিন (৪২) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঝড়ের সময় অনন্তপুর বাজার থেকে বাড়ি ফেরার সময় একটি ইউক্লিপ্টাস গাছ মমির উদ্দিনকে চাপা দেয়। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে তাকে মৃত ঘোষনা করে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাঈদুল ইসলাম। হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে রাতে প্রচন্ড কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টিতে জেলার রৌমারী, রাজিবপুর,চিলমারী, উলিপুর ও সদর উপজেলাসহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় সদ্য বেড়ে ওঠা ইরি ও বোরো ধান, ভূট্টা ক্ষেত, শাকসবজি ও বেগুন ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। সবচেয়ে কৃষিতে বেশি ক্ষতি হয়েছে রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে।
এছাড়াও সদর উপজেলার সারডোব গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক জানান, ঝড়ের কবলে পড়ে তার দুটি ঘর বিধবস্ত হবার পাশাপাশি সদ্য শীষ বেরোনো ৪ বিঘা বোরো ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গ্রামের মজলুম মিয়া, মহিজন, মফিজল মিয়া, বাবু মিয়া, আমজাদ হোসেন ও আবিয়ার ঘরের চালও উড়ে গেছে ঝড়ের তান্ডবে। কয়েকটি পরিবার খোলা আকাশের নিচে বাস করছে।
সারডোব গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম, আব্দুল খালেক ও নুরুল ইসলাম জানান, তাদের বোরো ধানের ক্ষেত মাটিতে লুটোপুটি খাচ্ছে। সদ্য শীষ বেরুনো এসব ক্ষেতের ধানের অধিকাংশ চিটায় পরিণত হতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হক জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতির পরিমাণ নিরুপন করা হয়েছে। তম্মধ্যে রৌমারীতে ভূট্টা ক্ষেত ৬ হেক্টর, ইরি ২৮জাতের ধান ৮০হেক্টর বাতাসে শুয়ে গেছে। এছাড়াও বিভিন্ন শাক সবজি বিশেষ করে ১১ হেক্টর বেগুন ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার বেশির ভাগটা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।