ঈদকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর সীমান্তে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাচালান বাণিজ্য চলছে জমজমাট। একাধিক মামলার আসামীরা সিন্ডিকেডের মাধ্যমে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে গরু, ছাগল, কয়লা, পাথর, চিনি, পান-
সুপারী, নাসিরউদ্দিন বিড়ি, শাড়ী-কাপড়, ইয়াবা ও মদসহ আরো বিভিন্ন প্রকার পন্য পাচাঁরের উৎসবে মেতে উঠেছে। সেই সাথে চোরাকারবারীরা পুলিশ, সাংবাদিক ও বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে পাচাঁরকৃত অবৈধ মালামাল থেকে চাঁদা উত্তোলন করছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- আজ মঙ্গলবার (১৩ জুন) ভোরে জেলার তাহিরপুর উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের ১১৯৬পিলার সংলগ্ন লালঘাট এলাকা দিয়ে একাধিক মামলার আসামী খোকন মিয়া, জামির আলী, আদম আলী, সুরুজ
আলী, রুবেল মিয়া, হাবিবুর মিয়া, নেকবর মিয়া ও হাজিল মিয়াগং রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে ২৫মেঃটন কয়লা পাচাঁর করে ৮টি বারকি নৌকা দিয়ে বৈঠাখালী বাঁধ সংলগ্ন পাটলাই নদীতে স্টিলবড়ি ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে।
এর আগে গতকাল সোমবার (১২জুন) রাত সাড়ে ১০টায় বালিয়াঘাট সীমান্তের অংশের লালঘাট ও লাকমা এলাকা দিয়ে একাধিক মামলার আসামী ও বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী ইয়াবা কালাম মিয়া, আব্দুল্লা মিয়া, জিয়াউর রহমান জিয়া,
মনির মিয়াগং ৩২ মেঃটন কয়লা পাচাঁর করে বোরাঘাট ও দুধেরআউটা গ্রাম সংলগ্ন পাটলাই নদীতে একাধিক স্টিলবড়ি ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে।
পরে অবৈধ কয়লা বোঝাই ইঞ্জিনের নৌকাগুলো পৃথক ভাবে নদীপথে সোলেমানপুর, আহসানপুর, সানবাড়ি এলাকা দিয়ে মধ্যনগর হয়ে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা থানার সামনে অবস্থিত মনতলা ডিপুতে নিয়ে বিক্রি করে।
কিন্তু অবৈধ কয়লা ও নৌকা জব্দ করাসহ চোরাকারবারীদেরকে গ্রেফতারের জন্য কোন পদক্ষেপ নেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়াও বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সামনে অবস্থিত দুধেরআউটা, বিন্নারবন্দ ও লাকমা গ্রামের বিভিন্ন
বসতবাড়িতে শতশত মেঃটন পাচাঁরকৃত অবৈধ কয়লা মজুত করাসহ টেকেরঘাট সীমান্তের নীলাদ্র লেকপাড়, বুরুঙ্গাছড়া ও রজনীলাইন এলাকা দিয়ে ভারত থেকে কয়লা পাঁচার করে বড়ছড়া শুল্কস্টেশনের বিভিন্ন ডিপুতে নিয়ে
মজুত করা হচ্ছে প্রতিদিন। একই ভাবে বীরেন্দ্রনগর সীমান্তের লামাকাটা ও সুন্দরবন্দ, চাঁনপুর সীমান্তের নয়াছড়া, গারোছড়া, রাজাই, কড়ইগড়া, বারেকটিলা ও লাউড়গড় সীমান্তের যাদুকাটা নদী, সাহিদাবাদ, পুরান লাউড় এলাকা দিয়ে
অবৈধ ভাবে ভারত থেকে কয়লা, পাথর, চিনি, সুপারী, পান, নাসিরউদ্দিন ও মাদকদ্রব্যসহ বিভিন্ন মালামাল পাচাঁর করা হচ্ছে। এব্যাপারে অভিযান পরিচালনা করলে লাখলাখ টাকা মূল্যের অবৈধ পাথর, কয়লা ও মাদকসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা সম্ভব হতো জানিয়েছে সচেতন এলাকাবাসী।
এব্যাপারে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার রাজ্জাক বলেন- ক্যাম্পের সোর্স হিসেবে করা কাজ করে আমার জানা নাই। এব্যাপারে খোঁজ নিয়ে আপনাকে জানাব। টেকেরঘাট কোম্পানী কমান্ডার মোতালিব বলেন- সোর্সদের সাথে আমার এখনও পরিচয় হয়নি। সীমান্ত এলাকায় বিজিবি, সাংবাদিক ও পুলিশের নাম ভাংগিয়ে অনেকেই চাঁদাবাজি করতে পারে। তবে চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য বিজিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে।