রিও দে জেনেইরোর নিল্তন সান্তোস স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সকাল ৫টায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে পেরুর বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছে ব্রাজিল। দলের হয়ে একমাত্র ব্যবধান গড়া গোলটি ম্যাচের প্রথমার্ধে করেছেন লুকাস পাকুয়েতা।
ঘরের মাঠে এই নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেছে ব্রাজিল। গেল আসরেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে লাতিন আমেরিকার অন্যতম শক্তিশালী দলটি।
‘এ’ গ্রুপের শীর্ষে থেকে দ্বিতীয়রাউন্ডে পা রাখা ব্রাজিল স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচটিতে ফেভারিট ছিল। তবে ফেভারিটদের গোলের সুবিধা করতে দেয়নি পেরু। ম্যাচের ৫৬ শতাংশ সময় বল দখলে রেখেছে ব্রাজিল।
সময় বল দখলে রেখেও ১৫ বার আক্রমণে যেতে পেরেছেন নেইমাররা। যার মধ্যে অনটার্গেটে ফেলার মতো শর্ট ছিল ৮টি। কিন্তু পেরুর জালে একটি পাঠাতে পেরেছে স্বাগতিকেরা। ব্রাজিলের ১০ আক্রমণের বদলে পেরু আক্রমণ করেছে সাতবার। যার মধ্যে ছয়বারই বিরতির পর। কিন্তু লক্ষ্যে ফেলতে পারেনি একটিও।
এদিন ম্যাচের শুরুতেই বিপদ ডেকে আনে পেরু। ষষ্ট মিনিটে রেনান লোদির ক্রস বিপদ ডেকে আনার আগেই মাঠের বাইরে বের করে দেন কোরজো। কর্ণার পেয়ে যায় ব্রাজিল।
কিন্তু ওই সুবিধা কাজে লাগাতে পারেনি ব্রাজিল। দুই মিনিট বাদে ফের গোলের দারুণ সুযোগ তৈরি হয়েছিল। লুকাস পাকুয়েতা বল বাড়িয়ে দেন রিচার্লিসনের দিকে। ফিরতি ক্রসে নেইমারকে বল বাড়ান রিচার্লিসন। কিন্তু দারুণ সুযোগ পেয়েও নেইমার বলটি উড়িয়ে মাঠের বাইরে পাঠান।
গোল পেতে ব্রাজিলকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩৫ মিনিট পর্যন্ত। পাকুয়েতার পা থেকে আসা গোলে বড় ভূমিকা রেখেছেন নেইমার। প্রতিপক্ষের ডি বক্সের বাঁ দিক থেকে পাকুয়েতাকে বল বাড়িয়ে দেন পিএসজি তারকা।
ছোট ডি বক্সের সামনে থাকা পাকুয়েতা সুযোগ মিস করেননি। হালকা করে ঠেকে দিয়ে ব্রাজিলকে এগিয়ে নেন পাকুয়েতা। এর আগে কোয়ার্টার ফাইনালে চিলি বিপক্ষেও গোল করেছেন পাকুয়েতা।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে আরো কয়েকটি সুযোগ সৃষ্টি করে ব্রাজিল। কিন্তু পেরুর রক্ষণ ভাঙতে পারেনি। তবে লিড ধরে রাখতে পেরে স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছেড়েছে তিতের শিষ্যরা।
বিরতি থেকে ফিরে পিছিয়ে পড়া পেরু নিজেদের ঘুছিয়ে নেয়। এর মধ্যেই কয়েকবার সুযোগ হাতছাড়া করে ব্রাজিল। ৫২ মিনিটে গার্সিয়ার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এর চারমিনিট বাদে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন পেরুর ইয়োতুন। ৬০ মিনিটের মাথায় লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেওয়ার পর দুই মিনিট বাদে পোস্টের কাছ দিয়ে উড়িয়ে মারেন নেইমার।
৭৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার দারুণ সুযোগ পান নেইমার। ফাউলের করে ব্রাজিলকে ফ্রি কিক উপহার দেন কলেন্স। কিন্তু এত কাছ থেকে ফ্রি কিক পাওয়ার সুবিধা কাজে লাগাতে পারেননি নেইমার।
৮১ মিনিটে সমতায় ফেরার বড় সুযোগ পায় পেরু। ইয়োতুনের ফ্রি কিকে সবার উঁচুতে লাফিয়ে হেড করেন আলেকসান্দার কায়েন্স। কিন্তু বল ছিল না লক্ষ্যে। ওই যাত্রায় বেঁচে যায় ব্রাজিল।
এরপর নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোলের দেখা পায়নি কোনো দল। ইনজুরি সময়েও বাড়েনি। ব্যবধান ফলে এক গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলকে।
এর আগে কোয়ার্টার ফাইনালে চিলিকে হারিয়ে চলতি কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় ব্রাজিল। ম্যাচটিতে চিলিকে ১-০ গোলে হারায় ব্রাজিল। অন্যদিকে, পেরু শেষ আটে পরাজিত করে প্যারাগুয়েকে।
পেনাল্টি শুট-আউটে ৪-৩ গোলের জয় নিয়ে শেষ চারের টিকেট পায় পেরু। এবার পেরুকে হারিয়ে শিরোপা মঞ্চে উঠেছে ব্রাজিল।
দুদেশের মুখোমুখি লড়াইয়ে আরো এগিয়ে গেল ব্রাজিল। এই নিয়ে মোট ৫০বারের দেখায় ব্রাজিল জিতল ৩৬টি ম্যাচে। চলতি কোপা আমেরিকার গ্রুপ ম্যাচেও ব্রাজিল ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে পেরুকে। এবার আরেকবার হারিয়ে কোপার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ব্রাজিল