একাধিক মামলার চার্জশীট ভুক্ত আসামী হয়েও বহাল বতীয়তে আছে ডেমেশ্বর কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য কর্মচারী আব্দুর রশিদ।
তবে প্রতারণায় আশ্রয় নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি তার। শেষে-মেষ চার্জশীট ভুক্ত আসামী হয়েই আদালতে যেতে হলো তাকে।
জানা যায়, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার হাতিরথান গ্রামে চুরি-ছিনতাই ও লুটপাটের ঘটনায় গত ২৬মার্চ হবিগঞ্জ সদর থানায় (জিআর ৪৮/২১) মামলা দায়ের করেন জনৈক গৃহবধু।
এ মামলার এজাহার ভুক্ত প্রধান আসামী আব্দুর রশিদ দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকলেও অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে কৌশলে ম্যানেজ করে রাখে হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস।
পরে গত ১লা এপ্রিল হবিগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন চৌধুরীকে ৫০ হাজার টাকা উৎকোচ দিয়ে ঘটনার সময় অন্যত্র দায়িত্বরত থাকার ভূয়া প্রত্যয়ন গ্রহন করেন তিনি।
ওই প্রত্যয়নে আব্দুর রশিদকে বিকেল সাড়ে ৪টায় কর্মস্থলে দায়িত্বরত দেখানো হয়। পরে ওই ভূয়া প্রত্যয়ন দিয়ে হবিগঞ্জ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন আব্দুর রশিদের আইনজীবি মোহিত চৌধুরী।
একজন সরকারী কর্মকর্তার প্রত্যয়নে জামিন অযোগ্য ৩২৬ ধারার চার্জ থাকলেও আব্দুর রশিদকে জামিন দেন আদালত। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দেলোয়ার
হোসেন চৌধুরীর দেয়া প্রত্যয়ন পত্রে ফাইল স্বারক নাম্বার এবং কোন অফিস কপি সংরক্ষিত না থাকায় বিষয়টি সন্দেহের সৃষ্টি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার।
পরে প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী এবং ছবি-ভিডিও এবং প্রত্যয়ণ পত্রের যাবতীয় বিষয় পর্যালোচনা করে মামলার চার্জশীটে অন্তভূক্ত হয় আব্দুর রশিদ।
শুধু এ মামলাই নয়, ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে সরকারী ঔষধ বাহিরে বিক্রি, ক্লিনিকে আসা সেবা প্রত্যাশীদের সাথে অসাধু আচরণের অভিযোগও রয়েছে।
জানা যায়, হবিগঞ্জ আদালতে ১টি জিআর, ২টি সিআর, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে ১টি এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলাসহ মোট ৫টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এতগুলো মামলা ও অভিযোগ থাকা সত্তেও ওই ক্লিনিকে কিভাবে বহাল তবিয়তে আছেন আব্দুর রশিদ বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে সচেতন মহলকে।
জানতে চাইলে ভূয়া প্রত্যয়ণকারী দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, প্রত্যয়ন পত্রটি মামলার কাজে ব্যবহার করা হবে এটা তিনি জানতেন না।
এ রকম বিষয়টি ভবিষ্যতে তিনি সতর্ক থাকবেন। হবিগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ একেএম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, কমিউনিটি ক্লিনিকে বিকেল ৩টার পর কেউ দায়িত্বে থাকার নিয়ম নেই। এ রকম কোন প্রত্যয়ণ থাকলে সেটা ভূয়া, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।