মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া- সুনামগঞ্জের সীমান্ত নদী যাদুকাটায় চলছে এলাকার প্রভাবশালীদের মহাতান্ডব। আইনগত জটিলতার কারণে দীর্ঘদিন যাদুকাটা নদীর বালি-পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকার পর উচ্চ আদালতে নির্দেশে আবার তা চালু হয়।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বালি ও পাথর উত্তোলনের জন্য যাদুকাটা নদীর সীমানাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। তারপরও এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা আইন অমান্য করে যাদুকাটা নদীর দুই তীর
কেটে ও গভীর কোয়ারী (মৃত্যু কূপ) তৈরি করে সেইভ মেশিনসহ আরো বিভিন্ন যন্ত্র দিয়ে অবাধে বালি ও পাথর উত্তোলন করছে।
এঘটনার প্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টাস্কফোর্সের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে ১০টি মামলায় ২জনকে ৩মাসের কারাদন্ডসহ ১৮জনকে ১০লক্ষ ৫০হাজার টাকা অর্থদন্ড করা হয়।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রায়হান কবিরের নেতৃত্বে পরিবেশ অধিদপ্তর, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার বাহিনীর সমন্বয়ে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- জেলার তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তের লাউড়গড় বিজিবি ক্যাম্প হতে শুরু করে বারেকটিলা, মানিগাঁও, ঘাগটিয়া, ডালারপাড়, জাঙ্গালহাটি, শিমুল বাগান, গুচ্ছগ্রাম,
বিন্নাকুলি ও গরকাটিসহ যাদুকাটা নদীর দুই তীরে অবস্থায় আরো একাধিক গ্রামের শতশত একর ফসলি জমি, বাঁশ বাগান ও পাকা সড়কসহ কয়েক হাজার বসতবাড়ি ইতিমধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
শুধু মাত্র যাদুকাটা নদীর দুই তীর কেটে ও কোয়ারী তৈরি করে অবৈধ ভাবে বালি-পাথর উত্তোলন করার জন্য। প্রশাসনের চোখে ফাঁকি দিয়ে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন যাবত যাদুকাটা
নদী দুই তীর কেটে ও কোয়ারী তৈরি করে অবৈধ ভাবে বালি-পাথর উত্তোলন করে তা বিক্রি করে হয়েগেছে কোটিপতি।
তাদের অবৈধ কর্মকান্ডের সচিত্র তুলে ধরতে গেলে সম্প্রতি দৈনিক সংবাদ এর প্রতিনিধি ও উপজেলা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি কামাল হোসেনকে গাছে বেধেঁ নির্মম ভাবে নির্যাতন করে বালি
ও পাথর খেকো সন্ত্রাসীরা। এরপর সাংবাদিক নির্যাতনের সেই ভিডিও চিত্র মোবাইলে ধারন করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল করে দেয়। এঘটনার প্রেক্ষিতে সারা দেশে
সাংবাদিক মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়ে যাদুকাটা নদীর অবৈধ বালি ও পাথর খেকোদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয় প্রশাসন। কিন্তু আজ পর্যন্ত তাদের অবৈধ কর্মকন্ডা বন্ধ হয়নি বলে জানা গেছে।
এব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও দৈনিক সংবাদ প্রতিনিধি কামাল হোসেন বলেন- উচ্চ আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাদুকাটা নদীতে সীমান্ত
নির্ধারন করে দেওয়ার পর এলাকার প্রভাবশালীরা নদীর তীর কেটে ও কোয়ারী তৈরি করে অবাধে বালি ও পাথর উত্তোলন করছে। আমাকে যারা নির্যাতন করেছে তারাই এসব কর্মকান্ড করছে।
অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রায়হান কবির সাংবাদিকদের বলেন- জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন স্যারের নির্দেশনায় পরিবেশ ও নদী রক্ষায় আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।