রতন মিয়া,পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষগুলো এবার ফিরছে নিজের কর্মস্থলে। বাসস্টেন্ডে নেমেছে মানুষের ঢল।
জীবিকার তাগিদে অফিস ,আদালতকে সামনে রেখে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন যাত্রীরা ঢাকার পথে।আর এ সুযোগে একদিকে বাসগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করাসহ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার অভিযোগ উঠেছে।
নেত্রকোনার আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, চারদিকে উপচে পড়া ভিড়। দিনভর ট্রাক, বাস, পিকাআপ ভ্যান মাইক্রোসহ বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে ফিরছেন কর্মজীবিরা।
অনেকইে রাত থেকেই রওয়ানা দিয়েছেন যার যার গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। যার যেমন সামর্থ্য সে অনুযায়ী বাহনে চড়েই যাচ্ছেন।
ইতোমধ্যে সকল অফিস আদালত, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্টানসহ গার্মেন্টস গুলো পুরোদমে খুলে দেয়া হয়়েছে । এমতাস্থায় লম্বা ছুটি শেষে আবারো কর্মমূখী হচ্ছেন এ জেলার শত শত মানুষ।
আন্তজেলা বাসটার্মিনাল, রেলস্টেশন সব জায়গাতেই উপচে পড়া ভিড়ে হিমশিম খাচ্ছেন যানবাহন সংশ্লিষ্টরা। এই সুযোগে বাড়তি টাকাও হাতিয়ে নিচ্ছে পরিবহন ব্যবসায়ী ও রেলস্টেশনের কতিপয় কিছু দালাল চক্র। যাত্রীরাও বাধ্য হয়েই ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করছেন।
অনেকে আবার একটু নির্বিঘ্নে যেতে বেশ কয়েকজন একসাথে হয়ে প্রাইভেট মাইক্রো ভাড়া নিচ্ছেন। এদিকে যানযট কমিয়ে রাখতে সার্বক্ষনিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে জেলা ট্রাফিক বিভাগ।
গ্যাটলক বাসগুলোতে আইন উপেক্ষা করে সিটের অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে দিনরাত। আবার যাত্রীদের নিকট থেকে স্বাভাবিক লোকাল বাস অপেক্ষা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এজন্য চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
নেত্রকোনা জেলার ট্রাফিক ইনচার্জ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন কাজল জানান, ঈদে বাড়ি আসা প্রতিটি মানুষের কর্মস্থলে ফেরার আগ পর্যন্ত তারা ভোগান্তি নিরশনে তৎপরতা অব্যাহত রাখবেন বলে নিশ্চিত করেছেন। কোথাও যাতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেই দিকেও লক্ষ্য রাখছেন তারা।
জেলার বিভিন্ন্ উপজেলা কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, মোহনগঞ্জ থেকে আসা নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া আতিক মিয়া, সোহেল হাসান এবং গাজীপুরগামী রুবেল শেখসহ অসংখ্য
যাত্রী পিকাপ ভ্যানে চরে রওয়ানা দিয়েছেন। তারা জানান, রবিবার থেকে সব গামেন্টস খুলে দেয়া হচ্ছে, সময়মত কর্মস্থলে পৌঁছতে না পাড়লে অনেকের চাকুরি থাকবে না। আবার অনেকের বেতন বোনাস কেটে নেয়া হবে। তাই যে করেই হোক কর্মস্থলে ফিরতে হবে।
ঢাকাগামী যাত্রী বারহাট্টার শফিকুল ইসলাম জানান, তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকুরি করেন। সকালে কর্মস্থলে উপস্থিত না হলে চাকুরির সমস্য হবে। দীর্ঘদিন পর লম্বা ছুটিতে পরিবার
পরিজন নিয়ে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি শেষে এখন কর্মজীবনে ফিরছেন।তবে অতিরিক্ত যাত্রী চাপে টিকিট নিয়ে বাসে উঠা অনেকটাই দুস্কর। সেইসাথে বাসের ভাড়া বেশি হওয়ায় অল্প ভাড়ায় ট্রাকে চড়েই রওনা হয়েছেন।
পিকআপ ভ্যান চালক সিদ্দিক মিয়াসহ একাধিক চালকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের পরদিন থেকেই যাত্রীদের চাপ অনেক বেড়েছে। শাহজালাল বাস কাউন্টারসহ বিভিন্ন কাউন্টারে
ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকাগামী প্রতি টিকিট বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা থেকে ৪’শ টাকায়। যদিও সংশ্লিষ্টরা বলছেন ভাড়া বাড়ানো হয়নি।
এ ছাড়াও ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে আন্তঃনগরসহ লোকাল প্রতিটি ট্রেনেই ছিলো উপচে পড়া ভিড়। ছাদে বসেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অসংখ্য মানুষকে চড়তে দেখা গেছে।
জেলা মটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুছ বলেছেন, অতিরিক্ত লোক ঈদের সময় চাপের মুখে বাসে নিতে হয়। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি আমি দেখছি। আমি লোকজন পাঠাচ্ছি তারা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে।
নেত্রকোনা জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আরিফ মিয়া বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি আমার জানা নেই।বাসের স্টাফ নয় ওরা যাত্রী সেজে টিকিট নিয়ে অনেক সময় যাত্রীদের কাছে বিক্রি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে।